বাংলাদেশি হিন্দুরা দেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিক—এমনটা চান না ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস। গতকাল শনিবার আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রয়ে হোসাবলে এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তাদের (হিন্দুদের) মাতৃভূমি। সেখানেই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মাথুরায় অনুষ্ঠিত দত্তাত্রেয় হোসবলে আরএসএসের দুই দিনব্যাপী কার্যনির্বাহী সভার সমাপ্তিতে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়টি আমলে নিয়ে তিনি বলেন, আরএসএস চায় বাংলাদেশের হিন্দুরা নিজ দেশেই নিরাপদে থাক। তারা ভারতে চলে আসুক—এমনটা চায় না রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ।
দত্তাত্রেয় হোসাবলে বলেন, ‘ভারত সরকার এরই মধ্যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ে কথা বলেছে। সংঘও এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। আমরা চাই না বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা (ভারতে) অভিবাসন করুক, ওখানটাই তাদের জন্মভূমি। সেখানে শক্তিপীঠ (একধরনের মন্দির, বাংলাদেশ এ ধরনের সাতটি মন্দির আছে)। তবে বাংলাদেশে হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সারা বিশ্বের সংগঠনগুলো বাংলাদেশে হিন্দুদের সমর্থনে আওয়াজ তুলেছে।’
এর আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সিএএ আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। দেশগুলো থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরেই নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ঘোষণা করেছিল, ভারতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হবে। সেই অনুয়ায়ী সংশোধনী বিল আনে কেন্দ্র সরকার। ওই বছরের ডিসেম্বরে ভারতের সংসদে পাস হয় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিলে সই করেন।
বিল পাসের চার বছর পর চলতি বছরের ১১ মার্চ বিতর্কিত এই আইন চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে ভারত সরকার। ক্ষমতাসীন বিজেপি তাদের ২০১৯ সালের ইশতেহারে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকরের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে দেরি হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে করোনা মহামারির কথা বলেছে দলটি।
নতুন নিয়ম অনুসারে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা নথিবিহীন অমুসলিম অভিবাসীদের জন্য সিএএর অধীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদনের যোগ্যতার সময়কাল ১১ থেকে কমিয়ে ৫ বছর করা হয়েছে। এর ফলে যাঁরা ২০১৪ সালের আগে এসব দেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাঁরা দেশটির নাগরিকত্ব পাবেন।
আপনার মতামত জানানঃ