ভারতের গুজরাটে মিলল বৃহদাকার এক সাপের জীবাশ্মের। দৈর্ঘ্যে যা প্রায় ৫০ ফুট। আর ওজন কমপক্ষে ১ টন হতে পারে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত বিশ্বের দীর্ঘতম সাপের জীবাশ্ম এটি।
‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘ম্যাডসোইডে’ নামে অবলুপ্ত প্রজাতিভুক্ত ছিল এই বিশাল সাপ। এ পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন সাপের জীবাশ্মের ভিত্তিতে ‘টাইটান বোয়া’কেই সবথেকে বড় সাপ মনে করা হতো। কিন্তু ‘বাসুকি’র আগমনের পরে পুরো হিসেবটা উল্টেপাল্টে গিয়েছে। গুজরাটে পাওয়া জীবাশ্ম থেকে পরিষ্কার, ‘টাইটানে’র থেকে দৈর্ঘ্যে কোনও অংশে কম ছিল না ‘বাসুকি’। ভারতে জীবাশ্ম পাওয়া গেলেও ‘বাসুকি’ আফ্রিকাতেও পাড়ি দিয়েছিল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
এ-ও মনে করা হয়, ডাইনোসরদের অবলুপ্তির পরে (প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে) এবং মেগ্যালোডনের (দৈত্যাকৃতি হাঙর) আবির্ভাবের আগে (প্রায় ২৩ মিলিয়ন বছর আগে) ‘টাইটান বোয়া’ পৃথিবীতে ছিল। অর্থাৎ, সময়ের হিসেবে ‘বাসুকি’র আবির্ভাব কমবেশি ‘টাইটানে’র সময়েই হয়েছিল, এমনটা মনে করা যেতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গুজরাটের কচ্ছ জেলার একটি খনি এলাকায় সন্ধান মেলে জীবাশ্মটির। ২০০৫ সালে আইআইটি-রুরকি’র বিজ্ঞানীরা এই জীবাশ্মটি খুঁজে পেয়েছিলেন। খনি থেকে এই সাপের মেরুদণ্ডের ২৭টি কশেরুকার অংশ উদ্ধার করেছেন।
এর বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাসুকি ইন্ডিকাস’। এই প্রজাতির সাপকে ভারতের প্রাগৈতিহাসিক জীববৈচিত্র্যের অন্যতম বিশেষ নিদর্শন হিসেবে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
অধ্যাপক সুনীল বাজপেয়ী ও দেবজিত দত্তের নেতৃত্বে এই জীবাশ্মের নমুনা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, গবেষণা ও সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। দেবজিত দত্ত বলেন, ‘বাসুকি ছিল খুব ধীর চলনশক্তিসম্পন্ন বৃহদাকারের এক সাপ। ঠান্ডা ও ভেজা জায়গায় থাকে এরা। অ্যানাকোন্ডা ও পাইথনের মতো করে শিকার ধরে এরা।’
বাসুকি ইন্ডিকাসের সঙ্গে টিটানোবোয়া সাপের তুলনা করা হয়। কলম্বিয়ায় এই সাপের জীবাশ্ম পাওয়া যায়। এর দৈর্ঘ্য ৪৩ ফুট পর্যন্ত হতো। সে হিসেবে ভারতে পাওয়া বাসুকি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপ ছিল বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।
আপনার মতামত জানানঃ