পৃথিবীর বাইরেও কি প্রাণ রয়েছে? এলিয়েন কি সত্যিই আছে? মানুষের মনে এই কৌতূহল বহু দিনের। যদি থাকে, তবে তারা দেখতেই বা কেমন? মানুষের মতোই? নাকি কোই মিল গয়ার জাদুর মতো, নাকি সেই স্টিফেন স্পিলবার্গের ই.টি সিনেমার মতো? এই কৌতূহলের আজও কোনও উত্তর মেলেনি বটে।
তবে এবার এক নতুন গ্রহের খোঁজ পেল নাসা, যেখানে জীব বসতির প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রহটির নামকরণ করা হয়েছে ‘টিওআই-৭১৫ বি’ নামে।
এই ‘টিওআই-৭১৫ বি’ গ্রহ আকারে-আয়তনে আমাদের পৃথিবীর তুলনায় ঢের বড়। প্রায় দেড় গুণ বড়। পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩৭ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে এই গ্রহ। কী ভাবছেন? এই গ্রহে পারি দেয়া যাবে কি না! তাহলে একটা হিসাব বুঝে নিন। পৃথিবী থেকে সামান্য প্লুটোর দূরত্বই ০.০০০৬২৮ আলোকবর্ষ।
সেক্ষেত্রে ‘টিওআই-৭১৫ বি’ যেতে কতটা পথ পারি দিতে হবে? বুঝতে আর সমস্যা হবে না নিশ্চয়ই। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড হাতড়ে সম্প্রতি নাসা খুঁজে পেয়েছে এই সম্ভব্য আরও এক ‘পৃথিবী’।
এই গ্রহে একবার গেলে হিসেব নিকেশ সব গুলিয়ে যাবে। সময় যে কত দ্রুত ছোটে এখানে, তা কল্পনাও করতে পারবেন না আপনি। যেমন ধরুন, আমাদের এখানে বছর হয় ৩৬৫ দিনে। মানে সূর্যের চারদিকে একবার পাক খেতে সময় নেয় ৩৬৫ দিন। আর এই ‘টিওআই-৭১৫ বি’ গ্রহে বছর হয় মাত্র ১৯ দিনে। ১৯ দিনেই নিজের সূর্যের চারদিকে এক দফা গোটা পাক খেতে নেয় এই গ্রহ।
এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে নাসা। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মনে করছে, এই ‘টিওআই-৭১৫ বি’ গ্রহ বসবাসযোগ্য হতে পারে। এই গ্রহের ভূপৃষ্ঠে পানি পাওয়ারও সম্ভাবনাও রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা, যা এটিকে সম্ভব্য বসবাসযোগ্য হওয়ার মাপকাঠিতে আরও কিছুটা এগিয়ে দিয়েছে।
শুধু এই একটি নয়, ‘টিওআই-৭১৫ বি’-এর কাছেই আরও একটি গ্রহ রয়েছে। যেটি তুলনায় বেশ কিছুটা ছোট। পৃথিবীর থেকে সামান্য বড়। সেটির প্রকৃতি একই ধরনের। নাসার বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই গ্রহটিও সম্ভব্য বসবাসযোগ্য হতে পারে।
কিন্তু মাত্র ১৯ দিনেই নিজের সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এই ‘টিওআই-৭১৫ বি’। সেক্ষেত্রে সূর্যের খুব বেশি দূরে থাকার কথা নয় এর। বাস্তব ক্ষেত্রেও তাই-ই। সেক্ষেত্রে সূর্যের এত কাছে থেকে, কীভাবে বসবাসযোগ্য হতে পারে? নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, অসম্ভব নয়!
কারণ, যে সূর্যকে এই ‘টিওআই-৭১৫ বি’ বা অন্য ছোট গ্রহটি প্রদক্ষিণ করে, সেটি হল আসলে একটি বামন-নক্ষত্র। সেক্ষেত্রে আকারে আমাদের সূর্যের থেকে অনেক ছোট এই নক্ষত্রে এবং তুলনামূলকভাবে সূর্যের মত এতটা গরমও নয়। ফলে বসবাসযোগ্য হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
আপনার মতামত জানানঃ