বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, ডিসিটিএস বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতাকে সমর্থন করার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে, বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের সাথে যুক্ত থাকার সুযোগ করে দিবে। তবে এর জন্য আছে কিছু শর্ত।
যুক্তরাজ্য ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) নামের নতুন বাণিজ্য নীতি কার্যকর করেছে। যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৫টি উন্নয়নশীল দেশকে যুক্তরাজ্যে হ্রাসকৃত ও শুল্কমুক্ত সহজতর রপ্তানি সুবিধা দেবে।
তবে ডিসিটিএস অগ্রাধিকার সুবিধা ধরে রাখতে হলে বেশকিছু শর্ত পালন করতে হবে বাংলাদেশকে।
এগুলো হলো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তি ও কনভেনশন অনুসারে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারসহ সব ধরনের মানবাধিকার, শ্রম অধিকার সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি দমন ও পরিবেশ সুরক্ষা।
ডিসিটিএস বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উদার বাণিজ্য সুবিধা দেবে। যা বাণিজ্যের প্রসার, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে তরান্বিত করবে। এই নতুন স্কিম যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার দীর্ঘমেয়াদী ও পারস্পরিক অর্থনৈতিক সর্ম্পককে আরও শক্তিশালী করার জন্য যুক্তরাজ্যের যে অঙ্গীকার তারই প্রতিফলন।
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন আজ সোমবার জানায়, ডিসিটিএসে আনা পরিবর্তনের সুবাদে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরেও বাংলাদেশ তৈরি পোশাকসহ ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্তভাবে যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করতে পারবে।
যুক্তরাজ্য আগে ইইউ জিএসপি নীতি অনুসরণ করতো। হাইকমিশন জানায়, তার জায়গায় নতুন ব্যবস্থাটি চালু হবে যা জিএসপির চেয়েও উদার।
বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, ডিসিটিএস বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতাকে সমর্থন করার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে, বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের সাথে সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ করে দিবে।
‘প্রতিযোগিতামূলক দামে ভোক্তাদের আরও পণ্য বেছে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়ে এতে যুক্তরাজ্যও উপকৃত হবে। বাংলাদেশের সাথে আমাদের একটি আধুনিক ও পারস্পরিক লাভজনক অংশীদারত্বকে তুলে ধরছে এই ঘোষণা, যা বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুসারে গভীর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।’
এদিকে যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নতুন করে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে দরিদ্র দেশগুলো সুবিধা পায়। আরও সুনির্দিষ্টভাবে তারা বলেছে, এসব দেশ থেকে আসা অন্তত ৮৫ শতাংশ পণ্য যেন যুক্তরাজ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করবে ডিসিটিএস, বর্তমানে জিএসপির আওতায় ৮০ শতাংশ পণ্য এসব সুবিধা পাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) চিঠি লিখেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য। তারা হলেন— স্লোভাকিয়ার ইভান স্টেফানেক, চেক প্রজাতন্ত্রের মাইকেলা সোজড্রোভা, বুলগেরিয়ার আন্দ্রে কোভাতচেভ, ডেনমার্কের কারেন মেলচিওর, স্পেনের হাভিয়ের নার্ত এবং ফিনল্যান্ডের হেইডি হাউটালা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলকে গত ১২ জুন লেখা চিঠিতে তাঁরা বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
চিঠিতে তারা বলেছেন, এই চিঠির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা জানাতে চাই এবং আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানাতে চাই।
এসডব্লিউএসএস০৭৫৮
আপনার মতামত জানানঃ