সব প্রাণীই মলত্যাগ করে থাকে খাদ্য পচনের পর বর্জিত অংশ বার করে দেওয়ার জন্য। শরীর সুস্থ রাখতেই মানুষ থেকে শুরু করে সব প্রাণী মলত্যাগ কলে থাকে। কিন্তু এ বিশ্বে এমন এক প্রাণী রয়েছে যারা মলত্যাগ করতে নামলেই তারা বেশির ভাগ প্রাণ হারান ।
সেই প্রাণীর নাম হল স্লথ। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এই স্লথদের দেখতে পাওয়া যায়। এমনিতেই খুব ধীর হওয়ার কারণেই এই প্রাণীর নাম স্লথ। এরা সাধারণত গাছে বসবাস করে। সপ্তাহে একবার মলত্যাগ করে থাকে এই প্রাণীরা। আর গাছ থেকে নীচে নেমে মাটিতে না এলে তাদের মলত্যাগ হয় না।
সপ্তাহে ১ বার যখন তারা মলত্যাগ করে তখন তারা তাদের শরীরের মোট ওজনের এক তৃতীয়াংশ ওজনের মল ত্যাগ করে। গাছে থেকে মাটিতে নেমে এরা ছোট একটা গর্ত করে থাকে। সেখানে মলত্যাগ করে। এবং মলত্যাগ হওয়ার পর তা পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়।
কিন্তু এই মলত্যাগই অনেক সময় তাদের কাছে মৃত্যপুর ঘণ্টা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ মলত্যাগ করার সময়তেই বেশিরভাগ স্লথের মৃত্যু হয়। কারণ এমনিতেই ধীর গতির স্লথ। আর মলত্যাগের নির্দিষ্ট কিছু সময় তারা নড়াচড়া করতে পারে না। আর সেটাই ডেকে আনে তাদের কাল।
বৈজ্ঞানিক এবং প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মলত্যাগের আগে তারা মাটিতে নেমে প্রথমে নাচের ভঙ্গিতে একটা ছোট গর্ত করে। তার মধ্যে মলত্যাগ করে। তারপর তা পাতা দিয়ে ঢেকে তারপর গাছে চড়ে। তবে, এই প্রাণী মলত্যাগ করার সময় আবার বেশ অনেকটা সময় শরীরটাকে বেশি নড়াচাড়া করতে পারেনা।
মলত্যাগে কিছুটা সময় লাগে তাদের। আর সেটাই তাদের মৃত্যুকে ডেকে নিয়ে আসে। মাটিতে খুবই ধীর স্লথ। তারা মলত্যাগের সময় একেবারে হাতের মুঠোয় পেয়ে যায় অন্য প্রাণী। তারাই এসে তাদের শিকার করে। স্বাভাবিক শারীরিক নিয়মেই তাদের মলত্যাগ করতেই হয়। আর সেটা করতে যেই তারা গাছ থেকে নামে, ঠিক তখনই তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্য হিংস্র প্রাণী, বিশেষত বনবিড়াল।
স্লথরা যে গাছে থাকে তার দিকে নজর থাকে হিংস্র প্রাণীদের। আর মলত্যাগ করার জন্য নীচে যখন নামে স্লথরা তখন শিকারের জন্য তক্কে তক্কে তাকে হিংস্র প্রাণীরা। যেই স্লথ মলত্যাগ শুরু করে যেহেতু তখন তারা নড়াচড়া করতে পারে না তখনই হামলা করে হিংস্র প্রাণীরা। আর তাতে মৃত্যু ঘটে স্লথদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন মলত্যাগ করতে গিয়েই অর্ধেক স্লথ প্রাণ হারায়। আর সবথেকে বেশি হামলা চালায় বন বিড়াল। কিন্তু কিছু করার নেই। ৭ দিনে একবার প্রকৃতির নিয়ম স্লথদের গাছ থেকে নামতেই হয়। আর মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এই স্লথদের দেখতে পাওয়া যায়। স্লথ এমনিতে দারুণ সাঁতারু। কিন্তু এই স্লথদের সারাদিনের অধিকাংশ সময়টাই ঘুমিয়ে কেটে যায়।আবার অন্য একটি ঘটনা ঘটে জায়ান্ট পান্ডাদের ক্ষেত্রে। জায়ান্ট পান্ডারা যে পরিমাণ বাঁশ খায় তার প্রায় অনেকটাই মলত্যাগ করে বার করে দেয়।
এসডব্লিউএসএস/১৫৪৫
আপনার মতামত জানানঃ