মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য কাচিনে এক সঙ্গীত উৎসবে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির সামরিক জান্তা বাহিনী। এ হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন। কাচিনে এই বিমান হামলার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলা আশঙ্কা করা হচ্ছে।
থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি ও চীনের সংবাদমাধ্যম সিজিটিএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (২৩ অক্টোবর) কাচিনের হপাকান্ত শহরে সঙ্গীত উৎসবে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। স্পেনে নির্বাসিত মিয়ানমারের একজন সাংবাদিক তার ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে কাচিনে জান্তার বিমান হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
At least 30 people including famous Kachin local artists and KIA soldiers were killed last night in Hpakant Township by #Myanmar military airstrike. Those who have been killed were present at the rehearsal for the 62nd of Kachin Independence Organisation.
— Mratt Kyaw Thu (@mrattkthu) October 24, 2022
এই হামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বেসামরিকদের ওপর অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, ইয়াক-১৩০ মডেলের এই যুদ্ধবিমানটির ডকুমেন্টেড গ্রাউন্ড অ্যাটাক ক্ষমতা রয়েছে।
রোববার (২৩ অক্টোবর) কাচিনের হপাকান্ত শহরে সঙ্গীত উৎসবে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে। স্পেনে নির্বাসিত মিয়ানমারের একজন সাংবাদিক তার ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে কাচিনে জান্তার বিমান হামলার তথ্য জানিয়েছেন।
এছাড়া থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি ও চীনা সংবাদমাধ্যম সিজিটিএনও এই বিমান হামলার তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে সেখানে বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা ৩০ জনের বেশি বলে জানানো হয়েছে।
কাচিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কাচিন নিউজ গ্রুপের বরাত দিয়ে সিজিটিএন বলছে, কাচিন প্রদেশের হপাকান্ত শহরে অনুষ্ঠিত সঙ্গীত উৎসবে রোববার বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কাচিন জাতিগোষ্ঠীর অনেক বিনোদনকারী ও শিল্পীসহ ৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বিষয়টি সামনে আনেন মিয়ানমারের নির্বাসিত সাংবাদিক মরাট কিয়াও থু। সোমবার সকালে এক টুইটে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় গত রাতে হপাকান্ত শহরের বিখ্যাত স্থানীয় কাচিন শিল্পী এবং কেআইএ সৈন্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স অর্গানাইজেশনের ৬২তম মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন।’
পরে আরেক টুইটে বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা ৫০ জনেরও বেশি বলে জানান কিয়াও থু। তিনি বলেন, ‘আপডেট: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনেরও বেশি হয়েছে এবং এখনও গণনা চলছে। মৃতের সংখ্যা নিয়ে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স অর্গানাইজেশনের (কেআইও) আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও প্রকাশিত হয়নি।’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের কাচিন, শান-সহ বেশ কিছু প্রদেশ ফের অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের জাতিগত সংখ্যালঘু বিভিন্ন গোষ্ঠী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরোধিতা ও বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
এরপর থেকে মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। জাতিগত সশস্ত্র কাচিন বিদ্রোহী অধ্যুষিত এসব এলাকায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর উপস্থিতিও আগের তুলনায় বিভিন্ন সময়ই বাড়ানো হয়েছে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৮০২
আপনার মতামত জানানঃ