গ্রীক মিথোলজি মতে, দেবী আফ্রোদিতি’র সাথে দেবতা দিয়োনুসোস-এর গভীর প্রণয় ছিল। প্রত্নতাত্ত্বিকগণ সম্প্রতি পশ্চিম তুরস্কের আইজানোই নামের এক প্রাচীন শহরে এই দুই দেব-দেবীর ভাস্কর্যকে কাছাকাছি অবস্থায় আবিষ্কার করেছেন। প্রেমের দেবী আফ্রোদিতি এবং সুরার (মদ/পানীয়) দেবতা দিয়োনুসোস-এর ভাস্কর্য কাছাকাছি আবিষ্কৃত হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে এবার ভাস্কর্য দুটোর মাথা পাওয়া গিয়েছে। এর আগে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ ভাস্কর্য দুটোর শরীর মাথাবিহীন অবস্থায় খনন করে উদ্ধার করেছিলেন। এই খনন কার্যক্রমের সমন্বকারী কুত্যাহিয়া দুমলুপিনার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক গোখান কোসকুন তুরস্কের একটি রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানান,
এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। এই ভাস্কর্যগুলো প্রমাণ করে, কোনো আবেদন না হারিয়ে প্রাচীন গ্রীসে রোমান যুগের মতো বহুঈশ্বরবাদী সংস্কৃতি দীর্ঘদিন টিকেছিল। তুরস্কে ভাস্কর্যগুলো পাওয়ায় ধারণা করা যাচ্ছে এখানে একটা সময় ভাস্কর্য নির্মাণ করার কোনো কারখানা ছিল।
আইজানোই নামক তুরস্কের এই প্রাচীন শহরটি প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান যুগের বিভিন্ন বসতিতে সমৃদ্ধ। যদিও এখানে মানুষের বসতি দ্বিতীয় মিলিনিয়াম বি.সি (খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ থেকে ১০০১) সময়েও ছিল। কিন্তু এখানে আবিষ্কৃত অধিকাংশ ধ্বংসাবশেষ মূলত রোমান সাম্রাজ্য আমলের, যেমন : রোমান বাথস (গোসল এবং বিশ্রামের জন্য), জিউসের মন্দির, ম্যাসেলাম বা রোমান ইনডোর বাজার। ইউনেস্কো (UNESCO) আইজানোই শহরকে সম্ভাব্য বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
প্রত্নতাত্ত্বিকগণ একটি ক্রিক বেডের (ঝর্ণা বা নদীর তলদেশে থাকা পাথুরে স্তর) নিচে রোমান আমলের আফ্রোদিতি এবং দিয়োনুসোস-এর ভাস্কর্যের মাথা দুটো আবিষ্কার করেছেন। দুটো মাথা লাইমস্টোন তথা চুনাপাথর দিয়ে নির্মিত। আফ্রোদিতি’র মাথার উচ্চতা ১৯ ইঞ্চি (৫০ সেন্টিমিটার) এবং দিয়োনুসোস-এর মাথার উচ্চতা ১৯ ইঞ্চি (৪৫ সেন্টিমিটার)। তবে কীভাবে বা কেন ভাস্কর্য দুটোর শরীর থেকে মাথাগুলোকে আলাদা করা হয়েছিল তা এখনো জানা যায়নি।
এর আগে আইজানোই-তে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যবিধি এবং পয়-পরিস্কারের দেবী হেইইয়েইয়া’র (Hygieia) একটি ভাস্কর্য আবিষ্কার করেছিলেন।
তথ্যসূত্র : livescience.com
আপনার মতামত জানানঃ