সম্প্রতি ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে উদ্ভিদের একটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। শৈবাল গোত্রীয় নতুন প্রজাতির একটি উদ্ভিদ আবিষ্কার করেছেন তারা। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে আবিষ্কৃত উদ্ভিদটির নাম দিয়েছেন ‘মৎসকন্যা’। খবর বিবিসি
জানা গেছে, উদ্ভিদের গঠন অনেকটা মৎসকন্যার ন্যায়। পাঞ্জাবের সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এই প্রজাতিটির নাম দিয়েছেন ‘অ্যাসেটাবুলারিয়া জলকন্যায়’ ।
সংস্কৃত তে জলকন্যায় শব্দের অর্থ হলো মৎসকন্যা বা মহাসাগরের দেবী। বিজ্ঞানীরা জানান তারা ডেনমার্কের লেখক হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন এর রূপকথার চরিত্র ‘ লিটল মারমেইড’ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন নামকরণ করেছেন।
২০১৯ সালে দ্বীপটিতে ভ্রমণের সময় জীববিজ্ঞানীরা প্রথম এই ধরনের সামুদ্রিক শ্যাওলা খুঁজে পেয়েছিলেন। এরপর প্রায় দুবছর পর বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হলেন যে, এই প্রজাতির উদ্ভিদ এর আগে আবিষ্কৃত হয়নি।
বিজ্ঞানীদের মতে, বিগত চার দশকের মধ্যে দ্বীপপুঞ্জে প্রথম শৈবালের একটি প্রজাতি আবিষ্কৃত হলো।
এদিকে গবেষণাটি পরিচালনাকারী ড. ফেলিক্স বাস্ট বলেন, নতুন আবিষ্কৃত প্রজাতিটি দেখতে চমৎকার। এর সূক্ষ্ম নকশা দেখলে মনে হয় যেন মৎস্যকন্যার ধরে রাখা ছাতা।
তিনি আরো বলেন, সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পানিতে অক্সিজেনের ঘনত্ব হ্রাস করে, ফলে পানিতে বসবাসকারী মাছ ও জীবকুলের ওপর বিপজ্জনক প্রভাব ফেলবে এটি।
নতুন এই প্রজাতির উদ্ভিদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল যে, এরা একক নিউক্লিয়াসের একটিমাত্র বিশাল কোষ দিয়ে গঠিত। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এখনো পৃথিবীর কিছু কোরাল রীফ অবশিষ্ট রয়েছে; এসব রীফই সমুদ্রে শৈবালের সমৃদ্ধ বৈচিত্র্যকে ধরে রেখেছে। তবে জলবায়ু বিপর্যয় প্রতিনিয়ত ভাবিয়ে তুলছে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের। সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা এবং অম্লতা উভয়ই প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে এই বিপর্যয়ে।
তবে উদ্ভিদটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো বড় একটি নিউক্লিয়াসে তৈরি এককোষী উদ্ভিদ পুরো গাছটি।
এর ডিএনএ সিকোয়েন্সিংয়েই ১৮ মাসের বেশি সময় পার করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারপর গবেষণাগারে অন্য উদ্ভিদের নমুনার সঙ্গে এর পার্থক্য নির্ণয় করেছেন।এ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি ছেপেছে ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ জিও-মেরিন সায়েন্সেস।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত বেঁচে থাকা হাতেগোনা প্রবাল প্রাচীরগুলোর কয়েকটি আছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। এসব প্রবাল প্রাচীরে রয়েছে নানা রকম উদ্ভিদের বাস, বৈচিত্র্যময় সব শৈবাল যার অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়তে থাকা এবং পানিতে অ্যাসিডিক উপাদানের মাত্রা বেড়ে চলায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে এসব উদ্ভিদ।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৫১
আপনার মতামত জানানঃ