বাংলাদেশসহ ১০৬ দেশের ৫৩ কোটি ৩০ লাখ ফেইসবুক ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর ও ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে ফাঁস হয়েছে। এসব তথ্য প্রকাশ করে একটি লো-লেভেল হ্যাকিং প্লাটফর্ম প্রযুক্তি বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে। বিজনেস ইনসাইডার এ তথ্য সবার আগে প্রকাশ করেছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে শনিবার বলা হয়।
তথ্য ফাঁস হওয়ার তালিকায় বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছেন ৩৮ লাখ। ১০৬ দেশের মধ্যে এতে সবচেয়ে বেশি ৩ কোটি ২০ লাখ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের। রয়েছে যুক্তরাজ্যের ১ কোটি ১০ লাখ ও ভারতের ৬০ লাখ ব্যবহারকারীর গোপনীয় তথ্য।
অনেকটা বিনামূল্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এসব তথ্য অনলাইনে একজন বিক্রি করছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকাশিত তথ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফেসবুক ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর, ফেসবুক আইডি, পুরো নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, প্রোফাইল এবং কিছু ক্ষেত্রে ই-মেইল ঠিকানা।
ফেসবুক এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। এর আগে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার বিশ্বের বৃহত্তম এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্য ফাঁস হয়েছে।
ইনসাইডার ফাঁস হওয়া ব্যবহারকারীদের কিছু তথ্য যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার কথা দাবি করেছে। ফেসবুকের ডেটা সেট আইডির সঙ্গে ফোন নম্বর ‘ক্রস রেফারেন্সিং’য়ের মাধ্যমে মিলিয়ে দেখেছে সংবাদ মাধ্যমটি। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির পার্সওয়ার্ড রিসেট ডেটা সেট টেস্টে ফাঁস হওয়া তথ্যের ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে দ্বিতীয়বার (ডাবল চেক) যাচাই করা হয়েছে।
ইসরাইলের সাইবার অপরাধ বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান হাডসন রকের সহপ্রতিষ্ঠাতা অ্যালন গল শনিবার সবার আগে এসব তথ্য ফাঁস হওয়ার কথা জানায়। এক টুইটে তিনি জানান, সাইবার অপরাধীদের কাছে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হয়ে উঠতে পারে।
এসব তথ্য ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের অনেক গোপনীয় বিষয় জেনে তাদের বিপদের মুখে ফেলতে পারে হ্যাকাররা বলে মন্তব্য করেন গল। এর মাধ্যমে ‘স্ক্যামের’ সুযোগ নিতে পারে অপরাধীরা। টুইটে গল আরও বলেন, গত জানুয়ারি থেকে হ্যাকার সার্কেলে ঘুরতে থাকা ফেসবুক সংশ্লিষ্ট টেলিফোন নম্বর ও সর্বশেষ প্রকাশিত ডাটাবেজ একই মনে হচ্ছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ ডাটাবেজ নামমাত্র কয়েক ইউরোর ডিজিটাল ক্রেডিটে এক সুপরিচিত লো-লেভেল হ্যাকার প্লাটফর্মে বিক্রি করা হচ্ছে। এলন গল তার পরিচিত কয়েকজনের নম্বর এ ডেটাবেজের সঙ্গে মিলিয়ে নিশ্চত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফেসবুক একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছে তথ্য চুরির ঘটনাটি নিশ্চিত করে মন্তব্য করেছে যে ২০১৯ সালে এটি তাদের নজরে এসেছিল। তারা ফেসবুকের ‘কন্টাক্টস ইম্পোর্টার’ ফিচারের কিছু কারিগরি দুর্বলতা ঠিক করে সমস্যাটির সমাধান করেছে। কন্টাক্টস ইম্পোর্টারের মাধ্যমে হ্যাকাররা চাইলে ব্যবহারকারীদের প্রোফাইলের সঙ্গে এলোমেলোভাবে ফোন নম্বর জুড়ে দিতে পারতেন। যাদের তথ্য চুরি গিয়েছে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত, কারণ এই ডেটা এখন পাবলিক ডোমেইনে পাওয়া যাচ্ছে এবং হ্যাকাররাও ধরা পড়েননি।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫১৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ