চাঁদাবাজির মামলায় রাজশাহীর এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম আল ইমরান মিয়া (২৭)। তিনি সদ্য বিলুপ্ত রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। নগরীর বহরমপুর এলাকায় তার বাড়ি। বাবার নাম আবদুল ওয়াদুদ মিয়া। মঙ্গলবার (১৬মার্চ) রাত ১০টার দিকে নগরীর রাজিব চত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ বলছে, ইমরানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নগরীর বহরমপুর এলাকায় এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে। চাঁদা না পেয়ে নির্মাণশ্রমিকের মাথা ফাটিয়ে দেন তিনি। এ নিয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এ দিকে একই অভিযোগে আরেকটি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।
এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি নগরীর বহরমপুর এলাকায় ইয়াসিন আরাফাত নামের ঠিকাদারের কাছে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে সোহেল নামের এক নির্মাণ শ্রমিককে মাথা ফাটিয়ে দেন তিনি। পরে মামলা হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ইমরানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নগরীর বহরমপুর এলাকায় এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে। চাঁদা না পেয়ে এক শ্রমিকের মাথা ফাটিয়ে দেন তিনি। এ নিয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।’
আর এমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ইমরান নগরীর দাশপুকুড়, বহরমপুর, তেরখাদিয়া, বসুয়াসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসতেন। চাঁদার জন্য হুমকি দেয়া, ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই চাঁদা আদায়ের জন্য তার ছিল নিজস্ব ক্যাডারবাহিনী।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় মামলা হয়। এরপর ইমরান আত্মগোপনে যান। তবে নিজস্ব ক্যাডারবাহিনী দিয়ে তার চাঁদাবাজির কর্মকাণ্ড চলছিল।
বিষয়টি ডিবি পুলিশের নজরে এলে তাদের একটি দল মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাতে নগরীর রাজিব চত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস (এডিসি) আরো বলেন, ‘ইমরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চাঁদাবাজির অভিযোগ শোনা গেলেও থানায় চাঁদাবাজির দুটি মামলা রয়েছে’।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য দিনদিন চাউর হয়ে উঠছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে ক্ষমতার চূড়ান্তে বসবাস করেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগ্রহবোধ না করায় তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে চলেছে। ছাত্রলীগের এই আইনের উর্ধে চলে যাওয়ার পেছনে অবশ্য রাজনৈতিক নেতাদের কুৎসিত হাতের ভূমিকা রয়েছে। তারা বলেন, ছাত্রলীগ সংগঠনটির ছাত্রদের ধীরে ধীরে উগ্র এবং একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে রুপদানের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের অনৈতিক মদদ ও উস্কানি। এ বিষয়ে প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭০৭
আপনার মতামত জানানঃ