কভিড-১৯-এর প্রভাবে দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ না হলেও ৯৪ শতাংশ ব্যবসা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এই সময় টিকে থাকতে কর্মী কমিয়েছে ৪০ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের ৩৭ শতাংশ কর্মী কাজ হারিয়েছেন। আর গত এক মাসে মজুরি কমিয়েছে ৪১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় কভিড-১৯-এর প্রভাব বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। গত মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এসংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা দেশের কৃষি, ফ্যাশন ও প্লাস্টিকসহ ১২টি খাতের ৫০০ উদ্যোক্তার ওপর জরিপ চালায় আইএফসি। এতে দেখা যায়, করোনা-পরবর্তী নিজেদের ব্যবসা চালু রাখতে পেরেছে ৩৬ শতাংশ। সাময়িক সময়ের জন্য ৬৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হয়েছে। তবে পণ্য বা সেবা বিক্রি কমে গেছে ৯৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার কমেছে ৯২ শতাংশ, আফগানিস্তানে ৮৮ শতাংশ, ভারতে ৮৬ শতাংশ, নেপালে ৮৩ শতাংশ এবং পাকিস্তানে কমেছে ৬৮ শতাংশ।
আইএফসির এদেশীয় ব্যবস্থাপক ওয়েন্ডি ওয়ার্নার বলেন, ‘ব্যবসা মন্দার কারণে ৩৭ শতাংশ কর্মী কাজ হারিয়েছেন। কাজ সামাল দিতে ৪১ শতাংশ কর্মীকে বেতন কাটছাঁট করতে হয়েছে। এ ছাড়া ৬ শতাংশ কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। তবে এতেও লোকসান এড়ানো যায়নি।’
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৮৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানই তাদের ব্যবসায় লোকসান গুনেছে। ৪৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে তাদের ব্যবসা পরিচালনায় মূলধনের সংকটে পড়েছে। ৩৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দিতে পারেনি ঋণের কিস্তি। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও পানির মতো পরিষেবা বিল দিতে পারেনি ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। করোনার নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ তহবিল গঠন করেছে। তবে আইএফসির জরিপে দেখা যায়, ৭৬ শতাংশ উদ্যোক্তা এই ঋণ সম্পর্কে কিছুই জানে না। ২৪ শতাংশ আবেদন করে ঋণ পায়নি, আর জরিপে অংশ নেওয়া ০.৪ শতাংশ উদ্যোক্তা জানিয়েছেন তাঁরা ঋণ পেয়েছেন। গবেষণা অনুসারে সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে জানেন না এমন উদ্যোক্তাদের হার এই অঞ্চলের অন্য দেশের তুলনায় বেশি। বাংলাদেশ ৬১ শতাংশ, নেপালে ৬১, ইন্দোনেশিয়ায় ৬০, পাকিস্তানে ৩৪, ভিয়েতনাম ২৮ এবং শ্রীলঙ্কায় ২৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, ‘এসএমইসহ অন্য খাতে এপ্রিল-মে মাসে ঋণের সুদে ওয়েভার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম তহবিল গঠন করেছে।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ