সীমান্তের কাছে অতি উচ্চতায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে ভারতকে শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে চীন। দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এই পরীক্ষা চালিয়ে বেইজিং তার সামরিক পেশিশক্তি প্রদর্শন করেছে। এটা নয়া দিল্লির জন্য তাদের পরিষ্কার সতর্কতা।
ভারতের প্রভাবশালী টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ভারত সীমান্তের কাছে কারাকোরাম মালভূমিতে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, প্রথমবারের মতো ১৭,৩৯০ ফুটের কিছু ওপরে সাবসনিক গতির ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ছিল এটা।
এটার মধ্য দিয়ে চীন তার সামরিক শক্তি জানান দিয়েছে। তারা এটা জানান দিয়েছে যে কঠোর পরিস্থিতিতেও সবচেয়ে উন্নতমানের ক্ষেপণাস্ত্রকে তারা ভূমিতে নামিয়ে আনার ক্ষমতা রাখে, যেমন ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের হাতে আছে বা থাকতে পারে। তবে সীমান্তের কাছে কারাকোরামের কোন স্থানে এই পরীক্ষা করা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন ভারত সীমান্তের খুব কাছে এটা করা হয়ে থাকতে পারে, যেসব স্থান স্পর্শকাতর। চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, বেইজিংয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত বিষয়ে ৩১তম মিটিং যেদিন চলছিল, সেদিনই এই পরীক্ষা চালিয়েছে তারা।
ওদিকে ওই বৈঠকে তারা সীমান্ত বিষয়ে সংলাপ ও শান্তি বজায় রাখতে একমত হয়। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট একজন চীনা বিশ্লেষককে উদ্ধৃত করে বলেছে, ২০২০ সালে গালওয়ান সীমান্তে ভারত ও চীনা সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন সীমান্তে সমস্যা দেখা দেয়। তারপর সীমান্তের কাছে মালভূমিতে এমন অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে চীন।
ফুদান ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের উপপরিচালক লিন মিনওয়াং বলেন, এর মধ্য দিয়ে অবশ্যই একটি প্রতিরোধমূলক বার্তা দেয়া হয়েছে। যুদ্ধ এড়াতে আমাদেরকে সবার আগে লড়াই করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের দাবি মেনে নেয়া চীনের জন্য অসম্ভব, যদিও উভয় পক্ষ শিগগিরই সীমান্ত বিষয়ক ইস্যুগুলোতে একমত হতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ভারতের কাছে একটি জোর বার্তা গেছে। তা হলো, চীনের সেনাবাহিনী সামরিক সক্ষমতা অর্জন করেছে। ফলে এখন ভারতকে তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
চীনের অন্য একজন সামরিক ভাষ্যকার সং ঝোংপিং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ভারতের জন্য পরিষ্কার সতর্কতা হিসেবে উল্লেখ করেন। পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আলোচনায় চীনের অবস্থান শক্তিশালীভাবে জানান দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য হলো চীনের ভিতরে আসা সব হামলাকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে চীন, সেটা হোক সাবসুপারসনিক বা সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র।
আপনার মতামত জানানঃ