খেলার মাঠের নৈপুণ্যে বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। এ সাফল্য ও খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি দিন দিন মাঠের বাইরে ব্যবসার জগৎকেও বিস্তৃত করেছেন। আর তা করতে গিয়ে অধিকাংশ সময়ই বিতর্কে জড়িয়েছেন। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করা, পুলিশ হত্যার আসামির জুয়েলারি শোরুম উদ্বোধন কিংবা অনলাইন বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপনে পণ্যদূত হওয়ার জন্য চুক্তি করার মতো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন আরো আগেই। সর্বশেষ পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজির দায়ে গতকাল সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
দেশের পুঁজিবাজারের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের আনুষ্ঠানিক সংযোগ ঘটে ২০১৭ সালে। সেই বছর তিনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির শুভেচ্ছাদূত হন। পুঁজিবাজারে ক্রিকেটারদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো আইনি বিধিনিষেধ বা নৈতিক বাধা না থাকলেও সাকিব আল হাসানের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।
বিশেষ করে পুঁজিবাজারের আলোচিত-সমালোচিত বিনিয়োগকারী ও সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের হিরুর মাধ্যমে বিনিয়োগ করা ও কারসাজির কারণে আলোচনার শীর্ষে থাকা কোম্পানিতে বিনিয়োগ তাকে এ বিতর্কের অংশ করেছে। স্টক এক্সচেঞ্জের তদন্তেও সন্দেহজনক লেনদেনে তার নাম এসেছিল। যদিও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের আনুকূল্য তাকে শেয়ার কারসাজির কারণে শাস্তি পাওয়া থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। সেই সময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে শেয়ার কারসাজির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করা যায়নি বলে সাকিবের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যদিও তদন্তে কারসাজির সুস্পষ্ট প্রমাণ ছিল।
এ বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিবর্তন আসে বিএসইসির শীর্ষ পর্যায়ে। সংস্থাটির নতুন নেতৃত্ব অতীতের অনিয়ম ও কারসাজি ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ আগস্ট সংস্থাটির শুভেচ্ছাদূতের পদ থেকে সাকিব আল হাসানকে সরিয়ে দেয় বিএসইসি। সর্বশেষ গতকাল বিএসইসির কমিশন সভায় ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট থেকে একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সময়ে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির ঘটনায় সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ
কই ঘটনায় তার সঙ্গে পুঁজিবাজারের আলোচিত বিনিয়োগকারী মো. আবুল খায়ের হিরুকে ২৫ লাখ টাকা, হিরুর পিতা আবুল কালাম মাতবরকে ১০ লাখ টাকা, সাকিব ও হিরুর প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্টকে ১ লাখ টাকা, হিরুর প্রতিষ্ঠান লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজকে ১ লাখ টাকা, ইশাল কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৭৫ লাখ টাকা এবং মো. জাহিদ কামালকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সব মিলিয়ে চার ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে শেয়ার কারসাজির দায়ে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ছাড়াও আরো পাঁচ কোম্পানির শেয়ার কারসাজির ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম এসেছিল। এর মধ্যে ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন নিয়ে তদন্ত করেছিল ডিএসই। ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে ৬৮ টাকা ৬০ পয়সায় দাঁড়িয়েছিল। এ সময়ে যারা কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার লেনদেন করেছিলেন তাদের মধ্যে সাকিব আল হাসানও ছিলেন। তিনি এ সময়ে কোম্পানিটির ৮ লাখ ২০ হাজার শেয়ার কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছিলেন ২ লাখ শেয়ার। এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির কারণে বিএসইসি দেশ আইডিয়াল ট্রাস্ট কো-অপারেটিভ লিমিটেডকে ৭২ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। মো. আবুল খায়ের হিরু এ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
পরের বছর ২০২১ সালের ৫ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ারদর ১২ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ৩৩ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছিল। এ সময়ে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন নিয়ে তদন্ত করে ডিএসই। তদন্তে ব্যাংকটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার লেনদেনকারীর তালিকায় সাকিব আল হাসানের নাম উঠে আসে। তিনি ব্যাংকটির ২৭ লাখ শেয়ার কেনার বিপরীতে এক লাখ শেয়ার বিক্রি করেছিলেন। ব্যাংকটির শেয়ার কারসাজির কারণে বিএসইসি কনিকা আফরোজ ও তার সহযোগীদের ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করে। কনিকা আফরোজ মো. আবুল খায়ের হিরুর বোন।
একই বছরের ২০ মে থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত ফরচুন সুজ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন নিয়ে আরেকটি তদন্ত করে ডিএসই। এ তদন্ত প্রতিবেদন বিএসইসির কাছেও পাঠিয়েছিল এক্সচেঞ্জটি। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিএসইসি হিরুর পিতা আবুল কালাম মাতবর ও তার সহযোগীদের দেড় কোটি টাকা জরিমানা করে। এ তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, যারা কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার লেনদেন করেছিলেন, তাদের মধ্যে সাকিব আল হাসানের নামও ছিল। তিনি কোম্পানিটির ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩১৩টি শেয়ার কেনার বিপরীতে বিক্রি করেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ২৪৩টি।
২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ারদর ছিল ১২ টাকা ৬০ পয়সা। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তা দাঁড়ায় ২০ টাকা ১০ পয়সায়। ব্যাংকটির ওই সময়কার শেয়ার লেনদেন নিয়ে তদন্ত চালিয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লেনদেনকারীদের তালিকায় আবারো সাকিব আল হাসানের নাম উঠে আসে। তিনি এ সময়ে ব্যাংকটির ৭৫ লাখ ১ হাজার ৬৭৬টি শেয়ার কেনার বিপরীতে ১০ লাখ ২০ হাজার শেয়ার বিক্রি করেছিলেন। ব্যাংকটির শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার কারণে বিএসইসি আবুল কালাম মাতবর ও তার সহযোগীদের ৩ কোটি টাকা জরিমানা করে।
ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার নিয়েও ২০২২ সালে কারসাজি হয়েছে। ওই বছরের ২৯ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ছিল ৩৪ টাকা। একই বছরের ২৪ এপ্রিল এর দর বেড়ে ৫৪ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়ায়। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার লেনদেন নিয়ে ডিএসই তদন্ত করেছিল। আলোচ্য সময়ে সাকিব আল হাসান আইপিডিসির ১১ লাখ শেয়ার কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছিলেন ১০ লাখ ৬৯ হাজার ৪৩৩টি শেয়ার। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কারসাজির জন্য বিএসইসি মো. আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে।
এছাড়া ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার লেনদেন করেছেন সাকিব আল হাসান। এর বাইরেও আরো বেশকিছু কোম্পানির শেয়ারে তার বিনিয়োগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজির অনেক প্রমাণ থাকলেও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের কারণে সে সময় এসব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হয়নি, বরং হিরু ও সাকিবদের পুঁজিবাজারে কারসাজিতে উৎসাহ জোগানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শেয়ার কারসাজির দায়ে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপের কারণে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের কাছে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জরিমানার বিষয়টি আমি আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। আসলে এ ব্যাপারে কিছু জানিই না। কাল (আজ) বোর্ডে গিয়ে দেখি, তারপর বলা যায়। জানতে হবে জিনিসটা, কিসের জন্য করছে ওরা। এ মুহূর্তে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
এদিকে শেয়ার কারসাজির কারণে জরিমানার মুখে পড়ায় সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করছেন দেশের ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন বিসিবির ইমেজ রক্ষার জন্য এ ধরনের ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জেনুইনলি এটা হয়ে থাকলে খুবই দুঃখজনক। বিসিবির কিছুটা বদনাম হবে। তাই বিসিবি প্রেসিডেন্ট হয়তো ভাববেন, সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ এটা তো অফিশিয়াল সিদ্ধান্ত (বিএসইসির)। যদি বোর্ড ক্লিয়ার হয় তবে হয়তো পরের টেস্ট কিংবা টি-টোয়েন্টিতে বাকি ম্যাচগুলোয় তাকে খেলাবে না। ওকে হয়তো ট্যুর থেকে অফ করে দেবে।
তবে তার আগে বিসিবিকে শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে, জানতে হবে। এটা অথেনটিক রিপোর্ট হলে বোর্ড তো একটা ব্যবস্থা নেবেই। এমনও হতে পারে, ফারুক (বিসিবি প্রেসিডেন্ট) ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবেন। উনি (ক্রীড়া উপদেষ্টা) যদি বলেন, এটা তো অথেনটিক রিপোর্ট, ওকে বাদ দিয়ে দাও। তাহলে…। সিস্টেম বলেন, নিয়ম বলেন সবার জন্য সমান হতে হবে। এখন বিসিবি সভাপতি ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে এমন সিদ্ধান্ত হয়তো নেবে যাতে বোর্ডের ইজ্জতটা থাকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তবে বিসিবির প্রথমে সবকিছু জানতে হবে। খারাপ কিছু পেলে ব্যবস্থা নেবে। তার আগে সাকিবের সঙ্গে কথা বলবে, জিজ্ঞেস করবে যে তুমি এটার সঙ্গে ছিলা কিনা। এখনই ঢালাওভাবে কোনো অ্যাকশনে যাওয়া উচিত না। ট্যুরে আছে, সামনে টেস্ট ম্যাচ। তাই বিসিবির উচিত সবকিছু সঠিকভাবে জেনে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া।’
বিগত সময়গুলোয় সাকিব আল হাসানের বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ার ঘটনা কম নয়। সাকিব আল হাসান ২০২৩ সালে বেটউইনার নিউজ নামে একটি অনলাইন বেটিং সাইটের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী পণ্যদূত হওয়ার চুক্তি করেছিলেন। বিষয়টি সে সময় তার বিরুদ্ধে বেশ সমালোচনার জন্ম দেয়। বিসিবির অনুমোদন ছাড়া ক্রিকেটারদের কোনো ধরনের পণ্যের দূত হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই সময় সাকিব আল হাসান ক্রিকেট বোর্ডের কোনো অনুমোদন নেননি। আবার সমালোচনার মধ্যেও বেটিং সাইটটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে চাননি তিনি। পরবর্তী সময়ে বিসিবির চাপে তিনি চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হন।
এ ঘটনার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অনুসন্ধানে উঠে আসে, বেটিং সাইটটির মাধ্যমে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারও হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। এ বিতর্কের পর সাকিব আল হাসানকে নিজের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত বছর পুলিশ হত্যার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের মালিকানাধীন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুবাই গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার বিষয়টি তিনি নিজেই এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন। তার এ কাণ্ড সে সময় বেশ আলোড়ন ও সমালোচনার জন্ম দেয়। ২০১৯ সালে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করায় তাকে দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যদিও আইসিসির এ শাস্তি তাকে অর্থনৈতিক অপরাধের প্রলোভন থেকে দূরে সরাতে পারেনি। এছাড়া টুর্নামেন্টের মাঝে শোরুম উদ্বোধন, টুর্নামেন্টের বিরতিতে বিশ্রামের নামে দেশে এসে বাণিজ্যিক চুক্তি করার মতো বিষয়গুলোও তাকে সমালোচিত করেছে।
সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের অভিমত হলো সমসাময়িক অন্য সবার চেয়ে দলে সাকিবের প্রভাব ও আবেদন অনেক বেশি। উঠতি তারকা ও জুনিয়র ক্রিকেটাররা তাকে অনুসরণ করে থাকেন। দলের সেরা খেলোয়াড়ের তকমাকে কাজে লাগিয়ে বারবার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে তার পার পেয়ে যাওয়ার বিষয়টি অন্য ক্রিকেটারকেও প্রভাবিত করেছে। সাকিবের মতো নানা আর্থিক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়তে উৎসাহিত হয়েছেন তারাও। এক্ষেত্রে মাঠের সাকিবের মতোই মাঠের বাইরের সাকিবকে অনুকরণ করেছেন তারা। জড়িয়ে পড়েছেন শেয়ারবাজারের বিতর্কিত চরিত্রগুলোর সঙ্গে। সাকিব নিজেও বেশকিছু ক্রিকেটারকে হিরুর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করেছিলেন।
বাংলাদেশ দলের তারকা হিসেবে যশ, খ্যাতি ও অর্থবিত্ত সবই ধরা দিয়েছে সাকিবের কাছে। ২০১০ সাল-পরবর্তী সময়ে ব্যবসা জগতে পা রাখেন সাকিব আল হাসান। বিভিন্ন খাতে একের পর এক বিনিয়োগ করেছেন তিনি। রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়ী হিসেবে হাতেখড়ি সাকিব আল হাসানের। এরপর দ্রুতই নিজের ব্যবসায়িক পরিমণ্ডল বিস্তৃত করেছেন তিনি। দেশের পুঁজিবাজার, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, প্রসাধনী, ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, কাঁকড়া ও কুঁচের খামার, শপিং মল, স্বর্ণ আমদানির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে তার। দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে বড় অংকের বিনিয়োগ করেছেন তিনি। কিন্তু ব্যাট-বল হাতে তার সাফল্য ব্যবসায় ধরা দেয়নি। দেশে তার বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই রুগ্ণ। কিছু প্রতিষ্ঠান তিনি এরই মধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন
আপনার মতামত জানানঃ