পৃথিবীর সব আবিষ্কারের পেছনেই থাকে মজার কিছু ইতিহাস। কিছু আবিষ্কার হারিয়ে যায় কালের গর্ভে আর কিছু আবিস্কার যুগ যুগ ধরে বংশ বিস্তার করে চলে। তেমনই একটি আবিষ্কার হলো অ্যানেসথেসিয়া।
অ্যানেসথেসিয়া আবিষ্কারের পূর্বে ডাক্তারদের পারদর্শীতা বিচার করা হত তারা কত তাড়াতাড়ি একটা সার্জারী সম্পন্ন করতে পারেন তার উপর।
টেকনিক্যাল দক্ষতার থেকে সে সময় দ্রুত সার্জারী সম্পন্ন করতে পারা সার্জনদের বেশি নামডাক ছিল। অপারেশন চলাকালীন সময়ে ব্যথা নিবারণের প্রক্রিয়াটাও সে সময়ে ছিল বেশ অদ্ভুত আর ভয়ংকর।
অতিরিক্ত এলকোহল প্রয়োগ করে রোগীকে ডিসট্রাক্টেড করা থেকে শুরু করে, প্রবল আঘাত করে অজ্ঞান করার মত ভয়ংকর ইতিহাসও আছে জানা যায়।
এসব ভয়ংকর পদ্ধতির অবসান ঘটল হারফোর্ডের দন্তবিদ হোরেস ওয়েলসের (Horace Wells) জীবনের সাথে জড়িত এক ঘটনার দূরদর্শী চিন্তার মাধ্যমে।
সময়টা ১৮৪৪। সেসময়ে নাইট্রাস অক্সাইডকে কেবল দন্তবিদরাই ব্যবহার করতেন। দুশিন্তা মুক্ত করে হাসির উদ্যেগ ঘটায় বলে সে সময়ে পার্টি ড্রাগ (party drug) হিসেবেও এটা ব্যবহৃত হত। আর পরিচিত ছিল লাফিং গ্যাস নামে।
একদিন ওয়েলসের এক বন্ধু স্টেজ শো চলাকালে প্রচুর পরিমাণে এই গ্যাস নিয়েছিল এই ভেবে যে এতে সে দর্শকদের আরও বেশি এন্টারটেইন করতে পারবে। তবে ঘটল তার উল্টো, স্টেজ শো চলাকালে দুর্ভাগাক্রমে তার পা কেঁটে গেল। কিন্তু একি! তিনি কোন ব্যথা অনুভব করছেন না।
তাহলে কি অতিরিক্ত লাফিং গ্যাসই তাকে ব্যাথা থেকে মুক্ত করেছে৷ হ্যা ঠিক তাই দূরদর্শী ওয়েলস কারণ খুঁজতে গিয়ে আবিষ্কার করে ফেললেন পৃথিবীর প্রথম অ্যানেসথেসিয়া। পরবর্তীতে ওয়েলস অ্যানাসথেটিক হিসেবে নাইট্রাস অক্সাইডকে পেটেন্ট করে রাখেন৷
যদিও অনেকদিন যাবৎ এই গ্যাসের উপর নেশার কারণেই ওয়েলস এর বিষাদময় মৃত্যু ঘটে। তবুও তার এই আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানে তাকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।
আপনার মতামত জানানঃ