যুক্তরাষ্ট্র্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ মিলে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বিস্তারিত ও বিস্তৃত একটি পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা আছে। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র সৃষ্টির একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা আছে এতে। ওয়াশিংটন পোস্টকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন জেরুজালেম পোস্ট।
বলা হয়েছে সামনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। কিন্তু তা নির্ভর করছে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতি শুরু এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির ওপর। পরিকল্পনাকারীরা মনে করছেন এই চুক্তি পবিত্র রমজানের আগেই সম্পন্ন হতে পারে। ওদিকে বুধবার রাতে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
তারা রাফায় সামরিক হামলার বিষয়ে কড়া সতর্কতা দিয়েছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
এ সময় তারা জিম্মিদের মুক্তি এবং খান ইউনুসে ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) হামলা পরিকল্পনা নিয়ে সমঝোতার আলোচনা করেছেন। গ্যালান্টকে অস্টিন জানিয়েছেন যে, রাফায় আইডিএফের হামলার আগে সেখানে বেসামরিক কোনো মানুষের যাতে ক্ষতি না হয় তা আগে নিশ্চিত করা উচিত ইসরাইলের। গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহ দিতে হবে।
আইডিএফ চিফ অব স্টাফ হারজি হ্যালেভি পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছেন। লেবানন সীমান্তে রিজার্ভ কমান্ডার, নর্দান কমান্ড প্রধান মেজর জেনারেল ইউরি গরডিন এবং ৯১তম ডিভিশনের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাই কালপারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ও বেশ কয়েক আরব দেশ মিলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শান্তি চুক্তির কাঠামো নিয়ে কাজ করছে, যার মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বাস্তবসম্মত সময়সীমা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয় এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। প্রতিবেদন মতে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই ঘোষনা আসতে পারে।
এই দীর্ঘমেয়াদী শান্তি চুক্তির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হবে ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতি। মার্কিন ও আরব কর্মকর্তারা জানান, তারা প্রাথমিক ভাবে অন্তত ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চালুর প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন।
এই পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত হওয়ার পর তা সর্বসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করবে যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিনি সরকার গঠন ও এই উদ্যোগের প্রতি আরও সমর্থন আদায় করার চেষ্টা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রস্তাবিত পরিকল্পনার এমন কিছু ধাপ রয়েছে যা ইতোমধ্যে ইসরায়েল অস্বীকার করেছে। এ ধরনের কোনো উদ্যোগ ইসরায়েলের বর্তমান কট্টর ডানপন্থী সরকারের অনুমোদন পাবে বলে ভাবছেন না বিশ্লেষকরা।
প্রস্তাবিত উদ্যোগের মধ্যে আছে অধিকৃত পশ্চিম তীরের অনেক জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়া, পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি রাজধানী স্থাপন ও পশ্চিম তীর ও গাজার সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সরকার।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিয়ে এই চুক্তিতে ইসরায়েলকে রাজি করানো যেতে পারে।
মার্কিন সরকার এর আগেও বিভিন্ন সময় এ অঞ্চলের সংঘাতের স্থায়ী সমাধান হিসেবে ‘টু স্টেট’ (ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে অবস্থান) মডেলের কথা উল্লেখ করেছে।
আপনার মতামত জানানঃ