মহাকাশে ব্ল্যাক হোল নামক বস্তু রয়েছে এবং বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে মানুষ শক্তি পাওয়ার জন্য ব্যাটারির মতো তাদের ব্যবহার করতে পারে। এই ব্ল্যাক হোলের টান খুব শক্তিশালী বলে কিছুই তাদের থেকে পালাতে পারে না। এখন, বিজ্ঞানীদের কিছু ধারণা আছে কিভাবে আমরা এই ব্ল্যাক হোল থেকে শক্তি ব্যবহার করতে পারব।
একটি ব্যাটারি হিসাবে একটি ব্ল্যাক হোল ব্যবহার করার একটি উপায় হল চার্জ করা। এটা অনেকটা নিয়মিত ব্যাটারি চার্জ করার মতো, কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবহার করার পরিবর্তে আমরা এমন কণা ব্যবহার করি যেগুলিতে বৈদ্যুতিক চার্জ থাকে। এই চার্জযুক্ত কণাগুলিকে ব্ল্যাক হোলে পাঠানো হবে, এবং যত বেশি কণা প্রবেশ করবে ব্ল্যাক হোল তার নিজস্ব বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি করবে।
যখন এই ক্ষেত্রটি নতুন কণাগুলিকে দূরে ঠেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন আমরা বলতে পারি ব্ল্যাক হোলটি “সম্পূর্ণ চার্জযুক্ত”। এই প্রক্রিয়া থেকে আমরা যে শক্তি পাই তা আসে কণার ভর এবং বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র থেকে।
বিজ্ঞানীরা গণনা করেছেন এবং দেখেছেন যে, এই পদ্ধতিটি প্রায় 25% কার্যকর হতে পারে। এর মানে হল যে আমরা ব্ল্যাক হোলে যে ভর রাখি তার এক চতুর্থাংশ শক্তিতে পরিণত হতে পারে। পারমাণবিক বোমার মতো আমরা ব্যবহার করি এমন অন্যান্য জিনিসের তুলনায় এটি অনেক বেশি কার্যকর।
শক্তি বের করার জন্য, বিজ্ঞানীরা সুপার রেডিয়েন্স নামক একটি প্রক্রিয়া ব্যবহার করবেন। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে একটি ঘূর্ণায়মান ব্ল্যাক হোলের চারপাশের স্থানটি তার শক্তিশালী টানের কারণে বরাবর টেনে নিয়ে যায়।
মহাকর্ষীয় বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মতো তরঙ্গ যখন এই অঞ্চলে প্রবেশ করে, তখন তারা আরও শক্তির সাথে বিচ্যুত হতে পারে। এই বিচ্যুতি প্রক্রিয়াটি ব্ল্যাক হোলের ঘূর্ণন শক্তিকে তরঙ্গে পরিণত করে যা আমরা তখন শক্তি হিসাবে ব্যবহার করতে পারি।
শক্তির উৎস হিসাবে ব্ল্যাক হোল ব্যবহার করার আরেকটি উপায় হল Schwinger pairs। এগুলি এমন জোড়া কণা যা বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র থাকলে উপস্থিত হতে পারে। যদি আমাদের একটি সম্পূর্ণ চার্জযুক্ত ব্ল্যাক হোল থাকে তবে এর কাছাকাছি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রটি এত শক্তিশালী হতে পারে যে, এটি একটি ইলেক্ট্রন এবং একটি পজিট্রন তৈরি করে। বিপরীত চার্জযুক্ত পজিট্রনকে ব্ল্যাক হোল থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হবে। আমরা এই কণা সংগ্রহ করতে পারি এবং এটি শক্তি হিসাবে ব্যবহার করতে পারি।
যদিও এটি নিশ্চিত নয় যে, আমরা কখনও ব্যাটারি হিসাবে ব্ল্যাক হোল ব্যবহার করব কিনা। বিজ্ঞানীরা এই অদ্ভুত বস্তুগুলি কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে আরও বোঝার চেষ্টা করছেন। তারা ব্ল্যাক হোলগুলিকে এমন জায়গা হিসাবে দেখে যেখানে বিজ্ঞানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং মাধ্যাকর্ষণকে একসাথে আসতে হবে।
আপনার মতামত জানানঃ