আমাদের পরিচিত ফুলগাছগুলোর ৪৫ শতাংশ বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনের তত্ত্বাবধানে ৩০টি দেশের ২০০ বিজ্ঞানী এক গবেষণা চালিয়ে জানিয়েছেন, বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিড থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ ফসলের প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে।
শুধু তা–ই নয়, ২০২০ সাল থেকে আবিষ্কার হওয়া প্রায় ১৯ হাজার নতুন উদ্ভিদ ও ছত্রাকপ্রজাতির ৭৭ শতাংশই বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে। আর তাই আমাদের পরিচিত দৃষ্টিনন্দন অনেক ফুল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো দেখারই সুযোগ পাবে না।
এ বিষয়ে বিজ্ঞানী মাটিলদা ব্রাউন বলেন, ‘গাছপালার অস্তিত্বের সঙ্গে মানবতার ভিত্তি জড়িত। ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির কারণে হুমকির মুখে পড়ছে বিভিন্ন ধরনের ফুলগাছ।
সাধারণভাবে প্রতি ১০টি গাছের মধ্যে ৯টি থেকে ওষুধ তৈরির বিভিন্ন উপাদান পাওয়া যায়। যে হারে গাছ বিলুপ্ত হচ্ছে, এর মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে ওষুধের অর্ধেক উপাদান হারিয়ে ফেলব। আমরা জানি না, আমরা কোন কোন সুযোগ হারাচ্ছি। হয়তো আমরা ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ওষুধ যে গাছ থেকে পাব, তা হারিয়ে ফেলছি।
গবেষণার অংশ হিসেবে ওয়ার্ল্ড ভাসকুলার প্ল্যান্ট নামের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে পাওয়া উদ্ভিদের সবচেয়ে বড় তথ্যভান্ডার এটি। আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারস (আইইউসিএন) বিলুপ্তির মুখে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছের লালতালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় নতুন নতুন গাছের নাম যুক্ত হচ্ছে।
গবেষণার তথ্য মতে, পৃথিবীতে ছত্রাকের ২৫ লাখ প্রজাতি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ১০ ভাগ প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। এখনো ১ লাখের বেশি নতুন প্রজাতির উদ্ভিদের নাম তালিকাভুক্ত করা বাকি রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বজুড়ে মাটির নমুনা থেকে পরিবেশগত ডিএনএ বিশ্লেষণ করছেন। জিনোমিকস ও মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে কেমব্রিজের জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন মনিটরিং সেন্টারের বিজ্ঞানী স্যামুয়েল পিরনন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের অসচেতনতার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ।
সবচেয়ে ভয়ানক তথ্য হচ্ছে, অনেক গাছের তথ্য সংগ্রহ করার আগেই এগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অনেক প্রজাতি এখনো নাম-পরিচয়হীন। বিভিন্ন কারণে অনেক প্রজাতি হুমকির মুখে পড়ছে।
আপনার মতামত জানানঃ