পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব ব্যতীত অসীম মহাবিশ্বে অন্য কোনো প্রাণের অস্তিত্বের দাবি বা না থাকার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের বিষয়। এখন এই বিষয়ে, ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছে যে পৃথিবীর সৌরজগতে শনির চাঁদ এনসেলাডাসে প্রাণ থাকতে পারে।
শনি গ্রহে নাসার অনুসন্ধান মিশনে বরফে ঢাকা এনসেলাডাসের ফাটলের ভিতরে একটি জলের মতো বস্তু দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এতে ৯৮ শতাংশ জল রয়েছে। বাকি দুই শতাংশে হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেন ছাড়া আরও জৈব চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই সব লক্ষণ সেখানে জীবনের সম্ভাবনা নির্দেশ করে।
পানির অপর নাম জীবন। আবার পানি থেকেই জন্ম নিতে পারে জীবন। আর এ কারণে শনির একটি উপগ্রহে পানির খোঁজ পেয়ে দারুণ উচ্ছসিত বিজ্ঞানী ও গবেষকরা। নতুন প্রজন্মের টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব শনি গ্রহের একটি চাঁদে খুঁজে বের করেছে পানির বিশাল ফোয়ারা।
সম্প্রতি জেমস ওয়েব আবিষ্কার করে শনির ১৪৫ টি উপগ্রহ। এসব উপগ্রহ লক্ষ কিলোমিটারের বেশি দূর থেকে শনির চারপাশে ঘুরছে। এসব উপগ্রহের মধ্যেই একটি নাম এনসেলাডাস। এটি আকারে ছোট হলেও, সেখানে মিলেছে একধিক তথ্য। যা অবাক করছে বিজ্ঞানীদের।
সবচেয়ে বড় তথ্য, সেই এনসেলাডাসে পানির খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। টেলিস্কোপেই দেখা গেছে পানির ছবি। এততে অবাক বিজ্ঞানীরা অবাক। পানির ফোয়ারা বেরুচ্ছে সেখান থেকে। আর সেই পানির ফোয়ারার দৈর্ঘ্য কয়েক কিলোমিটার জুড়ে।
পানি ছাড়াও সেখানে পাওয়া গেছে জৈব কণাও। সেখান থেকে মিলতেও পারে প্রাণের সন্ধান। জেমস ওয়েব ছবিটি তুলেছিলো ২০২২ সালেই। ক্যাসিনি মহাকাশযান দেখেছিলো উপগ্রহটি। ক্যাসিনির স্পেকট্রোমিটারে পানির ফোয়ারা থেকে বোঝা যায়, সেখানে থাকতে পারে প্রাণ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, উপগ্রহে পানির ফোয়ারর পাশাপাশি জৈব কণাও ছড়াচ্ছে। এই কণাগুলোতে এমন অনেক জৈবিক ও রাসায়নিক কণা মিশে থাকতে পারে, যেখান থেকে প্রাণের আবিষ্কার করা যায়। জেমস ওয়েব ২০০২২ সালের নভেম্বরে এটির ছবি তোলে, আর ১৭ মে স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউট তা প্রকাশ করে। এরপরই ছবিগুলো ঘুম কেড়েছে বিশ্বের।
নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের র্বিজ্ঞানী সারাহ ফাগি জানান, টেলিস্কোপে যে দৃশ্য ধরা পড়েছে, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে এগুলো বিশালাকার পানির ফোয়ারা। তবে এখনও এ নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সূর্যের তাপ এনসেলাডাসের ভূমিতে উপস্থিত তরল বরফ মহাসাগরকে বাষ্পীভূত করে। শনি গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ সেই বাষ্পকে বাইরের দিকে টানে। তারপর প্রায়ই চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে এই ধরনের ফোয়ারা বের হতে দেখা যায় বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
এসডব্লিউএসএস/১২৩৫
আপনার মতামত জানানঃ