চাকরিক্ষেত্রে নারীর সমান অংশগ্রহণে গোটা বিশ্বই সচেতন। মধ্যপ্রাচ্য সহ কিছু দেশের কথা বাদ দিলে চাকরি ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার নিশ্চিতকরণে বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই আইন রয়েছে। ইদানিং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশেও নারীদের জন্য চাকরির সুযোগ নিশ্চিতকরণের আইন প্রনয়ণের উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চাকরি ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা রাখার বিষয়ে বিশ্ব সচেতন হলেও, অনেক দেশেই এই অভিযোগ রয়েছে যে, পুরুষের তুলনায় নারীরা চাকরিতে সুযোগ কম পান। কিন্তু চাকরি ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণে এমন বৈষম্যকে পাশ কাটিয়ে ফ্রান্সে এক ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ঘটে। যেখানে চাকরিক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণে প্যারিসের সিটি হলকে জরিমানা গুনতে হয়েছে।
অভিযোগ ছিল, ২০১৯ সালে প্যারিসের সিটি হলে ১৫টি শীর্ষ পদের মধ্যে ১১টি পেয়েছিলেন মেয়েরা। ফলে লিঙ্গ-বৈষম্য হয়েছে বলে সিটি হলকে এক লাখ ১০ হাজার ডলারের ফাইন করা হয়েছে। ফ্রান্সের পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রণালয় এই জরিমানা করেছে।
ফরাসি আইন অনুসারে চাকরির ক্ষেত্রে লিঙ্গ-ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। অর্থাৎ, কোনো সংস্থায় ছেলে ও মেয়েদের সংখ্যার মধ্যে খুব বেশি হেরফের হবে না। কিন্তু প্যারিসের সিটি হলের সর্বোচ্চ স্তরে মেয়েদের সংখ্যা অনেকটা বেশি হয়ে যাওয়ায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিল মন্ত্রণালয়। সিটি হলে ৩০ শতাংশের মতো পদে পুরুষদের নেয়া হয়েছিল।
চাকরিক্ষেত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষেত্রেও লিঙ্গ-বৈষম্যের শিকার হয়ে যেখানে নারীদের বঞ্চিত হবার খবর আসে, সেখানে এমন ঘটনাকে অনেকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন। একই সাথে সমালোচনা করছেন ফ্রান্সের পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রণালয়কে।
সমালোচনায় অংশ নেন খোদ প্যারিসের মেয়র হিডালগো। তিনি বলেন, এই জরিমানা অবাস্তব, অন্যায্য, ভয়ঙ্কর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত। তিনি আরো বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে মেয়েদের এগিয়ে আসার জন্য উৎসাহ দিতে হবে। কারণ, ফ্রান্সে অধিকাংশ জায়গায় মেয়েরা পিছিয়ে।
মেয়েরা যাতে চাকরিতে বেশি সুযোগ পান, তার জন্যই আইন করা হয়েছিল যে, সিনিয়র পদে ৬০ শতাংশের বেশি পদে পুরুষ বা নারী কেউই থাকতে পারবেন না। ২০০৩ সালে গৃহীত এই আইনের সূত্র ধরেই প্যারিসের সিটি হলের বিপক্ষে অভিযোগ আনা হয় এবং জরিমানা করা হয়।
আইনটি অবাস্তব বলে তা বাতিল করা হয়েছে মন্তব্য করে ফ্রান্সের পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, জরিমানার অর্থ যাতে মেয়েদের জন্য খরচ করা হয়। বিশেষ করে যাঁরা এই ধরনের জনস্বার্থের সঙ্গে জড়িত বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের জন্য খরচ হোক।”
এনডব্লিউ/কহো/০২৫০
আপনার মতামত জানানঃ