ভারতের সেনাবাহিনী বলছে, সন্দেহভাজন বিদ্রোহীদের গুলিতে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে তাদের পাঁচ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। সোমবার একটি তল্লাশি অভিযানের সময় লড়াই শুরু হলে এই সৈন্যরা নিহত হয়।
বলা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাসের পর এটিই ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওপর সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমণ। হামলার পেছনে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের সন্দেহ করা হচ্ছে। দেশটির সেনা মুখপাত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
সম্প্রতি এ অঞ্চলে সন্দেহভাজন বিদ্রোহীদের হাতে বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক নিহত হবার পর সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।
ভারতশাসিত কাশ্মীরের সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, পুঞ্চ জেলার একটি গ্রামে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা লুকিয়ে আছে বলে খবর পাওয়ার পর সৈন্যরা ওই গ্রামটি ঘিরে ফেলে।
আজ সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল দেবেন্দর আনন্দ জানিয়েছেন, ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত লাইন অব কন্ট্রোলের কাছে হিমালয়ান এলাকার পাহাড় থেকে তল্লাশি অভিযান চলার সময় গুলির ঘটনা ঘটে। এ হামলায় একজন জুনিয়র কমিশনড অফিসার ও চার সেনার প্রাণহানি হয়েছে। হামলায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।
গত ফ্রেব্রুয়ারিতে বিরোধপূর্ণ পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর সামরিক বাহিনীর উপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা এটি। গত সপ্তাহের দিকে কাশ্মীরে ৭ বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় ৯শ জনকে আটক করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
সাম্প্রতিক সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হাতে বেসামরিক লোক নিহত হবার বেশ কয়েকটি ঘটনার মধ্যে এই লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেল। গত সপ্তাহে ছয় দিনের মধ্যে সাত জন বেসামরিক লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
কাশ্মীরের রাজনীতিবিদরা এসব হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন। ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪০০-রও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে।
ভারতের সংবিধানের যে ৩৭০ ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করা হয়েছিল – ২০১৯ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার তা বাতিল করার পর থেকে কাশ্মীর অঞ্চলের তরুণরা আরো বেশি করে ভারতীয় শাসন-বিরোধী বিদ্রোহী তৎপরতার দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসেও দু’দেশ একে অপরের ওপর বিমান হামলা চালায়।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ এ ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীরের মালিকানা দাবি করে আসছে দুই প্রতিবেশি দেশ। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার সাংবিধানিক স্বীকৃতি বাতিল করলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় এই অঞ্চলে।
এসডব্লিউ/এসএস/১০২৬
আপনার মতামত জানানঃ