টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের দুরাবস্থা গত প্রায় এক দশক ধরে। এলাকাবাসীর এতোদিনের ভোগান্তির ইতি টানার আশ্বাস দিয়ে এটি সংস্কারে ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পও পাস হয় একনেকে। তবে দেশে প্রকল্পের যে শ্রীবৃদ্ধি তার ব্যত্যয় ঘটেনি এখানেও। প্রকল্প গ্রহণের ১৫ মাসেও ঠিকাদার নিয়োগ হয়নি। সড়কটি এখন যান চলাচলের জন্য প্রায় অনুপযোগী।
সূত্র মতে, মাদারীপুরের রাজৈর সীমানার টেকেরহাট থেকে গোপালগঞ্জ শহর পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ৪৪ কিলোমিটার। বছর দশেক ধরেই সংস্কারের অভাবে এর বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি প্রকল্পের কাজের জন্য দরপত্র চাওয়া হয়। এরপর আট মাস ধরে চলছে দরপত্রে অংশ নেয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই।
যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়ক বিভাগ এখন ওই রাস্তার গর্তগুলো মেরামতের কাজ করছে। কয়েক বছর ধরে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ সড়কে বড় কোনো মেরামত কাজ হয় না। এ কারণে রাস্তার বেশিরভাগ জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে।
রাস্তার উপরের অংশ প্রায় উঠে গেছে। গুদামে মালামাল পরিবহনে বেশ ঝক্কি হয়। যানবাহন চালকরা এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে জন্য অনেক ভাড়া হাঁকেন।
সদরের জলিরপাড় গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা বাড়ানোর কথা বলে সাত থেকে আট বছর কোনো মেরামত করা হয়নি। এখন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা প্রায় অসম্ভবই।
সংশ্লিষ্টদের অজুহাত
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন জানান, আঞ্চলিক সড়ক থেকে রাস্তাটিকে মহাসড়কে উন্নিত করতে ২০২০ সালের জুনে একনেকে প্রকল্পের অনুমোদন হয়। ছয়টি প্যকেজের মাধ্যমে কাজ শেষ করতে বরাদ্দ দেয়া হয় ৬১২ কোটি টাকা।
এরপর গত বছরের নভেম্বরে প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ হয়। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি ঠিকাদার পেতে দরপত্রের আহবান করা হয়। সম্প্রসারণের কাজ হবে বলে বন বিভাগ এর মধ্যে সড়কের দুইপাশের গাছও কেটে ফেলেছে। তবে এখনও ঠিকাদার পায়নি সড়ক বিভাগ।
নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন ‘প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। আসলে প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগসহ আনুষ্ঠানিক কিছু প্রক্রিয়া শেষ করতেই অনেকটা সময় লেগে যায়। তার উপর করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছু কাজ আটকে থাকে। এই বছরের শুরুতে ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
‘দরপত্রে অংশ নেয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জমা দেয়া দলিল যাচাই-বাছাইয়ে এখন সময় লাগছে। এর মধ্যে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মেরামত কাজ চলমান রাখা হয়েছে।’
ঠিকাদার বাছাইয়ে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এবং সড়ক ও জনপদ গোপালগঞ্জ সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তাপসী দাশ বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র নিয়ে মূল্যায়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তারা ঠিকাদার নিয়োগ দিলেই কাজ শুরু হবে।’
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৪৫৮
আপনার মতামত জানানঃ