করোনার মধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুও। এ বছরে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ১০০ রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে যার মধ্যে কেবল আগস্ট মাসেই রোগীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এর মধ্যে আজ রোববার (১৫ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু ও ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে ১৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
প্রথমদিকে ডেঙ্গু শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আজ পর্যন্ত ৯৬০। দেশের অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালগুলোয় ভর্তি আছে আরও ৮৯ জন রোগী।
আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৪৪২ জন এবং সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৫ হাজার ২৬ জন। দেশে ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত ২৫টি মৃত্যুর তথ্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) কাছে এসেছে। তারা এখন পর্যন্ত কোনো পর্যালোচনা শেষ করে ডেঙ্গুতেই মৃত্যু কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে এখনও মহামারি বলা যাচ্ছে না। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি মহামারি হওয়ার পর্যায়ে আছে। করোনা মহামারির কারণে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো থেকে বিস্তারিত কোনো তথ্য না আসায় সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।
‘ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবং ডেঙ্গু মহামারি প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সিজিএসের চেয়ারম্যান ও কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী এবং মেডিকেল কীটতত্ত্ববিদ ও আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিএম সাইফুর রহমান। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বক্তারা বলেন, ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি মহামারির দিকেই যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী ডেঙ্গি মহামারির শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে আরেকটা ডেঙ্গু মহামারি হলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এই মহামারি প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। লার্ভা নিধন না করে পূর্ণাঙ্গ এডিস মশা নিধনের প্রতি জোর দিতে বলেছেন তিনি। বিশ্বের অন্যান্য দেশ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এডিস মশার বিস্তার রোধে যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করার দিকে নজর দিয়েছে, সেগুলো আমাদের দেশে প্রয়োগের জন্য তিনি বিশেষ আহ্বান জানান।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২২১২
আপনার মতামত জানানঃ