২০০৯ সালে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংসদ নির্বাচনে ‘ভূমিধস বিজয়ের’ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার প্রায় এক যুগ হতে চললো। বড় একটি দলের কিছু শাখা-উপশাখা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়ে কোনোমতে একটি সংগঠন বানিয়ে নামের শেষে ‘লীগ’ জুড়ে নিজেদের মূল দলের শরিক ভাবতে শুরু করেছে ভুঁইফোড় অনেক গোষ্ঠী। দিনকে দিন সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে। পাড়া-মহল্লা, গ্রামে তো আছেই, শুধু রাজধানীতেই ‘লীগ’ জুড়ে দেওয়া সংগঠন পাওয়া যাবে কমপক্ষে তিন শ’।
‘অনুমোদন’ বিহীন এসব রাজনৈতিক দোকান গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্য চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, তদবির ও কমিটি বাণিজ্য করা। এসব সংগঠনের নেতারা নানা সময়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আলোচনায় এলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
নামসর্বস্ব এসব সংগঠনের পেছনে ‘লীগ’ শব্দ জুড়ে তো দিচ্ছেই, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যের নামও জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার করেও জানান দিচ্ছে অনেক সংগঠন।
এসব সংগঠনের বেশির ভাগ উপস্থিতি দেখা যায় রাজধানীতে। জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, পাবলিক লাইব্রেরি, জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনসহ রাজধানীর বেশ কিছু মিলনায়তনে ওইসব ‘ভুঁইফোঁড়’ সংগঠনের উপস্থিতি। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখেও তাদের কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।
এসব ‘লীগ’ নামধারী সংগঠনের হর্তাকর্তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনাতেই তাদের সংগঠন চলছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নামসর্বস্ব এসব ‘লীগ দোকানদাররা’ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কিছু নেতার আশপাশে ঘোরাঘুরি করেন কিছুদিন। এরপর তাদের সঙ্গে সেলফি তোলেন। ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ের বাইরে ঘোরাঘুরিও করেন নিয়মিত। শীর্ষপর্যায়ের কোনও নেতার কাছে মুখটা পরিচিত হলেই লীগ শব্দ জুড়ে খুলে বসেন রাজনীতির ‘দোকান’।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহযোগী সংগঠন যেসব
দলীয় সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হচ্ছে, যুবলীগ, মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও মৎস্যজীবী লীগ। এ ছাড়া ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হচ্ছে, জাতীয় শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগ।
মহিলা শ্রমিক লীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ আওয়ামী লীগের ‘নীতিগত’ অনুমোদিত সংগঠন।
তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের মতো কিছু সংগঠনের কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক স্বীকৃতি দেয় আওয়ামী লীগ। দলটির এক নেতা জানান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের মতো কিছু সংগঠন পঁচাত্তরের পর বৈরী পরিবেশে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রচার করেছে। এ কারণে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এর বাইরে আওয়ামী লীগের সহযোগী কিংবা ভ্রাতৃপ্রতিম কোনো সংগঠন নেই।
নামসর্বস্ব যত ‘লীগ’
গত দুই দিন ধরে ‘লীগ’ নামে নতুন আরও দুটি ‘সংগঠন’ দেখা গেলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এগুলো হলো ‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ ও ‘জনসেবা লীগ’।
চাকারিজীবী লীগের পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটির দাবি, গত দু’-তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে তারা।
নামসর্বস্ব এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনির। পোস্টারে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক হিসেবে সাইফুল ইসলাম ইমনের ফোন নম্বর দিয়ে তাতে পদ প্রত্যাশীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ এখনও (আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে) অনুমোদন পায়নি। দুই থেকে তিন বছর ধরে ফেসবুকে আমাদের প্রচার-প্রচারণা চলছে। অনুমোদনের চেষ্টা চালাচ্ছি।’
সংগঠনের উদ্দেশ্য কী, জানতে চাইলে ইমন জানান, ‘আওয়ামী লীগের অন্য সহযোগী সংগঠনগুলোর মতোই কাজ করতে চান তারা।
‘অনুমোদন’ বিহীন এসব রাজনৈতিক দোকান গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্য চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, তদবির ও কমিটি বাণিজ্য করা। এসব সংগঠনের নেতারা নানা সময়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আলোচনায় এলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে গজিয়ে ওঠা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আরও বেশ কিছু সংগঠন হয়েছে। গত প্রায় এক যুগে গড়ে ওঠা এমন ৭৩টি সংগঠনের নাম পেয়েছে দলটি। আওয়ামী লীগই বলছে, এর বাইরে আরও অনেক সংগঠন আছে, যেগুলোর কথা তাদের জানা নেই। সুযোগসন্ধানী এসব সংগঠনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
এমন সংগঠনগুলো হলো—
১. জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় লীগ, ২. জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় সংসদ, ৩. আওয়ামী প্রচার লীগ, ৪. আওয়ামী সমবায় লীগ, ৫. আওয়ামী তৃণমূল লীগ, ৬. আওয়ামী ছিন্নমূল হকার্স লীগ, ৭. আওয়ামী মোটরচালক লীগ, ৮. আওয়ামী তরুণ লীগ, ৯. আওয়ামী রিকশা মালিক-শ্রমিক ঐক্য লীগ, ১০. আওয়ামী যুব হকার্স লীগ, ১১. আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, ১২. আওয়ামী পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা লীগ, ১৩. আওয়ামী পরিবহন শ্রমিক লীগ, ১৪. আওয়ামী নৌকার মাঝি শ্রমিক লীগ, ১৫. আওয়ামী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী লীগ, ১৬. আওয়ামী যুব সাংস্কৃতিক জোট, ১৭. বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা গবেষণা পরিষদ, ১৮. বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, ১৯. বঙ্গবন্ধু একাডেমি, ২০. বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, ২১ ওলামা লীগ, ২২. বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, ২৩. বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, ২৪. বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদ, ২৫. বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ, ২৬. বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, ২৭. বঙ্গবন্ধু বাস্তুহারা লীগ, ২৮. বঙ্গবন্ধু আওয়ামী হকার্স ফেডারেশন, ২৯. বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, ৩০. বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ, ৩১. বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ, ৩২. বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, ৩৩. বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, ৩৪. বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, ৩৫. বঙ্গবন্ধু আদর্শ পরিষদ, ৩৬. আমরা মুজিব সেনা, ৩৭. আমরা মুজিব হব, ৩৮. চেতনায় মুজিব, ৩৯. বঙ্গবন্ধুর সৈনিক লীগ, ৪০. মুক্তিযোদ্ধা তরুণ লীগ, ৪১. নৌকার সমর্থক গোষ্ঠী, ৪২. দেশীয় চিকিৎসক লীগ, ৪৩. ছিন্নমূল মৎস্যজীবী লীগ, ৪৪. ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লীগ, ৪৫. নৌকার নতুন প্রজন্ম, ৪৬. ডিজিটাল ছাত্রলীগ, ৪৭. ডিজিটাল আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, ৪৮. ডিজিটাল আওয়ামী ওলামা লীগ, ৪৯. বাংলাদেশ আওয়ামী পর্যটন লীগ, ৫০. ঠিকানা বাংলাদেশ, ৫১. জনতার প্রত্যাশা, ৫২. রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমি, ৫৩. জননেত্রী পরিষদ, ৫৪. দেশরত্ন পরিষদ, ৫৫. বঙ্গমাতা পরিষদ, ৫৬. বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ, ৫৭. আমরা নৌকার প্রজন্ম, ৫৮. আওয়ামী শিশু যুবক সাংস্কৃতিক জোট, ৫৯. তৃণমূল লীগ, ৬০. একুশে আগস্ট ঘাতক নির্মূল কমিটি, ৬১. আওয়ামী প্রচার লীগ, ৬২. সজীব ওয়াজেদ জয় লীগ, ৬৩. বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি লীগ, ৬৪. আওয়ামী শিশু লীগ, ৬৫. আওয়ামী তৃণমূল লীগ, ৬৬. আওয়ামী তরুণ প্রজন্ম লীগ, ৬৭. আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ, ৬৮. বাংলাদেশ জনসেবা লীগ, ৬৯. আওয়ামী শিশু-কিশোর লীগ, ৭০ অভিভাবক লীগ, ৭১ উদ্যোক্তা লীগ, ৭২. আওয়ামী অনলাইন লীগ এবং ৭৩. বিশ্ব আওয়ামী অনলাইন লীগ।
ধান্ধা লীগে বিব্রত আওয়ামী লীগ
ধান্ধাবাজির’ এসব দোকানের নেতাদের কর্মকাণ্ডে বিব্রত আওয়ামী লীগ। এসব সংগঠনকে খোদ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরই ‘রাজনৈতিক দোকান’ নামে অভিহিত করেছেন।
আর দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, নামের আগে লীগ যোগ করলেই আওয়ামী লীগ নয়। এদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় নেতাদের অবশেষে ঘুম ভাঙতে শুরু করেছে। নামের আগে ‘লীগ’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অথবা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নাম ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
এমনকি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, কিংবা মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধ লাগিয়ে রাজনৈতিক দোকান খুলতে দেওয়া হবে না। যারাই এসব করবে এখন থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ।
ইতিমধ্যে অ্যাকশন শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। ‘বাংলাদেশ চাকরিজীবী লীগ’ নামের নতুন দোকান খুলে সারা দেশে জেলা-উপজেলা এমনকি বিদেশেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন দেওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচনায় আসেন ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর।
তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। একই সঙ্গে ছিলেন কুমিল্লা জেলা উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।
‘চাকরিজীবী লীগ’ খোলাসহ নানা কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা যা বলছেন
এসব নামসর্বস্ব লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘লীগ নাম ব্যবহার করে যারা এসব করে বেড়াচ্ছে তারা প্রতারক। এদের বিরুদ্ধে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হানিফ বলেন, ‘এর আগে সারাদেশে আমরা আড়াই শ’ প্রতারক সংগঠনের তালিকা করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিছুদিন এদের তৎপরতা বন্ধ ছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে। এদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এগুলো আওয়ামী লীগের অনুমোদিত বা সমর্থিত সংগঠন নয়। কিছু সুযোগসন্ধানী চক্র এসব করছে। আমাদের কিছু নেতা সরল বিশ্বাসে এসব চতুর ব্যক্তিকে ছবি তুলতে, সেলফি তুলতে অনুমতি দেন। এসব ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা অব্যাহত রেখেছেন তারা। যেকোনও নামে যেকোনও নাগরিকের সংগঠন করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু এরা তো আওয়ামী লীগের নামের সঙ্গে নাম মিলিয়ে প্যাড-সর্বস্ব সংগঠন করে দলের অর্জন ম্লান করছে। এই অপতৎপরতা বন্ধে আওয়ামী লীগ কাজ শুরু করেছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাসিম তার ফেসবুকে এক পোস্টে বলেছেন, ‘ময়ূরের পেখম লাগালেই কাক কখনো ময়ূর হয় না। তেমনি নামের সঙ্গে “লীগ” শব্দ ব্যবহার করলেই আওয়ামী লীগ হয়ে যায় না। আওয়ামী লীগ একটা আদর্শ। এটাকে ধারণ করতে হয়। দলের গঠনতন্ত্রের বাইরে কোনো সংগঠনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক নেই।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার সময় হাতে গোনা কয়েকটি সংগঠনকে পেয়েছি আমাদের পক্ষে কথা বলার জন্য।
এখন গণমাধ্যমের কল্যাণে জানতে পারছি লীগ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধার শব্দ ব্যবহার করে রাজনৈতিক ধান্ধাবাজির দোকান। এসব চলতে দেওয়া যায় না। অ্যাকশন শুরু হয়েছে, চলমান থাকবে।
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের যে পণ্যের চাহিদা বেশি, মুনাফা বেশি এবং ধান্ধা করা সবচেয়ে সুবিধাজনক, সে পণ্যটির ছড়াছড়ি হওয়াটা স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগ তেমনি একটি পণ্যে রূপান্তরিত হয়েছে। আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করে কেবলি যে হাইব্রিড আওয়ামী লীগানরা সুবিধা নিচ্ছে, ধান্ধা করছে তা নয়। আওয়ামী লীগ অনুমোদিত সংগঠনগুলোর সাথে ধান্ধাগত দিক থেকে ভুঁইফোড় এসব সহযোগী সংগঠনগুলোর তেমন কোনো তফাৎ নেই। দীর্ঘ এক যুগ ধরে ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের যে আদর্শ তাতে শাণ দিতে পারেনি উল্টো আদর্শের জলাঞ্জলি দিয়ে নেমেছে ব্যবসায়ে, ধান্ধায়।
তারা বলেন, আওয়ামী সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই দাবি করা হয়ে থাকে যে দেশে তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। কিন্তু কী কারণে বাড়ছে এর খবর দিতে পারেন যারা আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে মূলত নিজেদের আখেরে গোছাতে গিয়ে দেশে অরাজকতা তৈরী করছেন, বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন। আর এসবের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সাধারণ জনগণ।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬১৮
আপনার মতামত জানানঃ