যুক্তরাষ্ট্রের টিকা প্রস্তুতকারক কোম্পানি নোভাভ্যাক্সের তৈরি করোনা টিকা ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। সোমবার (১৪ জুন) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ করে কোম্পানিটি এই তথ্য জানিয়েছে। তাদের দাবি, করোনার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এই কার্যকারিতার হার পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যুক্তরাজ্য ও মেক্সিকোর প্রায় ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করেন। এই ধাপের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জরুরিভিত্তিতে টিকাটি প্রয়োগের অনুমোদন পাওয়ার পথ উন্মুক্ত হলো। এই বছরের তৃতীয়ার্ধ্বে টিকাটি অনুমোদন পেতে পারে বলে প্রত্যাশা করছে নোভাভ্যাক্স।
কোম্পানিটি জানায়, প্রোটিনভিত্তিক করোনা টিকাটি ৯৩ শতাংশের বেশি কার্যকর। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনার ভ্যারিয়েন্টও ছিল।
নোভাভ্যাক্সের গবেষণা ও উন্নয়ন প্রধান ড, গ্রেগরি গ্লেন জানান, উচ্চ ঝুঁকির গুরুতর আক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবীদের ক্ষেত্রে টিকাটি ৯১ শতাংশ, মাঝারি ও গুরুতর আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ এবং নোভাভ্যাক্স শনাক্ত করতে পারেনি এমন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ কার্যকর। তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে বিশ্বে করোনার নতুন যে ভ্যারিয়েন্ট ছড়াচ্ছে সেটির বিরুদ্ধে এই টিকা সুরক্ষা দিতে পারবে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে ছিল মাথা ব্যথা, অবসাদ ও পেশিতে ব্যথা। সাধারণভাবে এসব ছিল হালকা। অল্প কয়েকজন অংশগ্রহণকারীর কিছু মাত্রায় গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এই বছরের তৃতীয়ার্ধ্বে ১০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের পথে রয়েছে নোভাভ্যাক্স এবং চতুর্থার্ধ্বে প্রতি মাসে ১৫ কোটি ডোজ উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে বলে দাবি করেছে কোম্পানিটি।
ষাটোর্ধ্বদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না দেওয়ার পরামর্শ
ষাটোর্ধ্বদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ স্থগিত করা উচিত বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি (ইএমএ)।
ইউরোপের এই ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্সের প্রধান বলেছেন, বিরল রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কায় এবং অন্যান্য ভ্যাকসিন সহজলভ্য হওয়ায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ষাটোর্ধ্বদের শরীরে প্রয়োগ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকাকে সব বয়সীদের জন্য নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করে। তারপরও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি সদস্য দেশ তাদের নির্দিষ্ট একটি বয়সের জনগোষ্ঠীর ওপর এই টিকার প্রয়োগ স্থগিত করেছে। বিরল রক্ত জমাট বাঁধার কারণে ৫০ থেকে ৬৫ বছর অথবা তদুর্ধ্বদের মাঝে এই টিকার প্রয়োগ স্থগিত করেছে ইইউর কয়েকটি দেশ। যদিও রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা তরুণদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা গেছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকার ঝুঁকির ব্যাপারে ইএমএ’র কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের প্রধান মার্কো কাভালেরি ইতালীয় দৈনিক লা স্ট্যাম্পাকে বলেছেন, মহামারির প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে আমাদের অবস্থান ঝুঁকি-উপকার অনুপাতে সব বয়সীদের অনুকূলে ছিল এবং আছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস এবং ঝুঁকির তুলনায় তরুণ জনগোষ্ঠীর সংক্রমিত কম হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় কাভালেরি বলেন, মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন যেমন— মডার্না, ফাইজার-বায়োএনটেক তরুণদের শরীরে প্রয়োগ করাই বেশি ভালো।
তাহলে ষাটোর্ধ্বদের শরীরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের এড়ানো উচিত কি-না; এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এড়ানো উচিত। ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো অনেক দেশ এমআরএনএ ভ্যাকসিনগুলোর ব্যাপক সহজলভ্যতার আলোকে এটি বিবেচনা করছে।’
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/২০৪৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ