বাংলাদেশ চীন থেকে সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ টিকা কিনবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, এর প্রথম চালান আগামী জুনে ঢাকায় আসতে পারে।
মঙ্গলবার(২৫ মে) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট ভলকান বোজকিরের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে টিকা আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেখানে মার্কিন ওষুধ প্রশাসনের (এফডিআই) অনুমতি লাগবে। সে কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে। চীন বাংলাদেশকে প্রথম ধাপে ৫ লাখ টিকা উপহার দিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বাংলাদেশকে ৬ লাখ টিকা উপহারের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
গত সপ্তাহে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘চীনের মন্ত্রী বাংলাদেশকে ভালো বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তারা টিকার অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সিনোভ্যাকের আরও একটি চীনা টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। যৌথভাবে এই টিকা উত্পাদনের সম্ভাব্যতা দেখতে একটি চীনা দল এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ সফর করবে।’
রুশ ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গেও আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। কখন টিকা আসবে, টিকার পরিমাণ, বীমা, টিকা কার্যকর না হলে কী হবে, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এগুলোর খুঁটিনাটি দেখছে। তারা এখন বেশ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভোলকান ভজকির।
স্বল্প আয়ের দেশের করোনা টিকার বঞ্চনাকে বিশ্বের ভয়াবহ পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেন ভোলকান ভজকির। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সবার জন্য টিকা সহজলভ্য না হলে বিশ্বের কোনো দেশই করোনার মতো মহামারি থেকে নিরাপদ নয়।
মঙ্গলবার ঢাকায় দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এসে করোনা টিকার এই বঞ্চনার কথা আবারো জোরালোভাবে তুলে ধরেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভোলকান ভজকির।
তিনি জানান, কোনো দেশ তাদের সব নাগরিককে টিকা দিয়ে দিয়েছে। আর বিপদে পড়া দেশগুলোর মাত্র শূন্য দশমিক তিন শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছে।
বিশ্ব পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে ভোলকান ভজকির বলেন, করোনার জন্য ভ্যাকসিন তৈরি, সরবরাহের ক্ষেত্রে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এখনো ভ্যাকসিন সমানভাবে সব দেশে বা মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। অনেক দেশেই প্রথম ডোজ দেয়ার পরে, দ্বিতীয় ডোজ দিতে পারছেন না। যে দেশগুলোর সবচেয়ে বেশি টিকার প্রয়োজন হচ্ছে তারাই টিকা সবচেয়ে কম পাচ্ছে। কারণ তারা উৎপাদক দেশ নয় বলে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি বলেন, সবার জন্য টিকা সহজলভ্য না হলে বিশ্বের কোনো দেশই করোনার মতো মহামারি থেকে নিরাপদ নয়। জাতিসংঘের কোভ্যাক্স সুবিধার কথা তুলে ধরে দ্রুত এর ফলাফল আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ভজকির বলেন, জাতিসংঘের ৭৫তম অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে ‘সবার জন্য টিকা’ ক্যাম্পেইন নিয়ে কাজ করছি। সব দেশের প্রয়োজনে যেন সমানভাবে সবাই করোনার টিকা পেতে পারে, এজন্য বন্টন ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের কোভ্যাক্স সুবিধা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। সুখবর হলো, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে যাচ্ছে। ফলে, শুধু নিজেদের কথা চিন্তা না ধনী দেশগুলো উপর এখন জোর দিতে পারবো বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ