দেশে আবারও বেড়ে চলেছে করোনা। প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে করোনা সংক্রমণ ও মৃতের হার। এ অবস্থায় ফের সীমিত করা হচ্ছে চলাফেরা। চলাচল সীমিত করতে গিয়ে সারাদেশে গণপরিবহনরে ভাড়া এরই মধ্যে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা কার্যকর করা হচ্ছে বুধবার (৩১ মার্চ) থেকে। আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এর আগে, সোমবার (২৯ মার্চ) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়। যেখানে, গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওইদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীর সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠকে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানান।
বর্তমান ভাড়ার চেয়ে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। বিআরটিএ এর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
দেশে করোনার সংক্রমণ আবার বেড়ে যাওয়ায় বাস-মিনিবাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সরকারি নির্দেশনার পর বাসমালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়াল।
বিআরটিএর সঙ্গে মালিক-শ্রমিকদের বৈঠকে বাস ও মিনিবাসে চালক, সহকারী ও যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাসে রাখতে হবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
যদিও ভাড়া বাড়লেও বাসগুলোতে অর্ধেক আসন খালি রাখা হবে কি-না কিংবা স্বাস্থ্যবিধি কতটুকু মানা হবে তা নিয়ে উদ্বেগ আছে অনেকের মধ্যেই।
উত্তরা থেকে নিয়মিত মতিঝিলে বাসে যাতায়াত করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফারাহ সাজিয়া। তিনি বলছেন, “গত বছরও একই ভাবে ভাড়া বাড়ানো হয়েছিলো আসন খালি রাখার কথা বলে। কয়েকদিন পর শুধু ভাড়াই বেশি দিয়েছি। বাস ভর্তি করেই যাত্রী উঠিয়েছে চালক ও হেলপাররা।”
বাংলাদেশে গত বছর ৩১শে মে থেকেও গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখার নির্দেশ দেয়ার পরেও ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়েছিলো সরকার। পরে পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে আবার স্বাভাবিক যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছিলো।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পদক্ষেপ হিসেবে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে মোট আসনের ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি ও করোনার সংক্রমণরোধে অন্যান্য বিধি অনুসরণ করে ট্রেনে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশে করোনা সংক্রমণের ৩৮৮তম দিন আজ। এই সময়ে দেশে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিকে গুরুতর বলে বর্ণনা করেছেন গবেষকেরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ৮৯৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮ হাজার ৯৪৯ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৮ জন।
মহামারির শুরু থেকে বিশ্বের সব দেশ ও অঞ্চলের করোনা সংক্রমণের হালনাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করছে ওয়ার্ল্ডোমিটারস নামের একটি ওয়েবসাইট। তাদের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৬ লাখের বেশি, বিশ্বে এমন দেশের সংখ্যা এত দিন ছিল ৩২টি। এখন বিশ্বের ৩৩তম দেশ হিসেবে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪৪৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ