 দিন যত যাচ্ছে বৃটেনের সিটি এবং অর্থমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অপসারণের দাবি তত জোরালো হচ্ছে। বিশেষ করে দেশটির বিরোধী শিবির বার বার দাবি তুলছে যেন টিউলিপকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। টোরি নেতা বার্গাহার্টের পর এবার টিউলিপকে তার দায়িত্ব থেকে বরখাস্তের আবেদন জানিয়েছেন কনজারভেটিভ দলের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা কেমি ব্যাডেনোচ।
দিন যত যাচ্ছে বৃটেনের সিটি এবং অর্থমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অপসারণের দাবি তত জোরালো হচ্ছে। বিশেষ করে দেশটির বিরোধী শিবির বার বার দাবি তুলছে যেন টিউলিপকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। টোরি নেতা বার্গাহার্টের পর এবার টিউলিপকে তার দায়িত্ব থেকে বরখাস্তের আবেদন জানিয়েছেন কনজারভেটিভ দলের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা কেমি ব্যাডেনোচ।
বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের কাছে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতে পরিবারের সঙ্গে টিউলিপের নাম আসায় তাকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করতে হবে। নিজের এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে এ আহ্বান জানান টোরি নেতা কেমি ব্যাডেনোচে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এক্সের পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির ওই নেতা বলেছেন, এখন সময় এসেছে টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার। তিনি আরও লিখেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী তার এমন বন্ধুকে দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব দিলেন যিনি নিজেই এখন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত।
সম্প্রতি সানডে টাইমসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের কাছে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। কেননা টিউলিপের সঙ্গে তার খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্ক রয়েছে। যাকে গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। বর্তমানে হাসিনা বাংলাদেশে দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। ড. ইউনূসের এসব মন্তব্যের পরই টিউলিপকে বরখাস্তের আহ্বান জানালেন টোরি নেতা কেমি।
টিউলিপ বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীর নীতিশাস্ত্র পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার কাছে নিজের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সেখানে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি কোনো ভুল করেননি। নীতিশাস্ত্র পর্যবেক্ষণকারী স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা চিঠিতে টিউলিপ বলেন, আমি স্পষ্ট যে কোনো ভুল করিনি।
ডাউনিং স্ট্রিট নিশ্চিত করেছে যে টিউলিপের ওই আহ্বানের পর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাবে স্যার লরি। তিনি তদন্ত সহ আরও কোনো পদক্ষেপ নেয়া যায় কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
এক্সের পোস্টে কনজারভেটিভ ওই নেতা বলেছেন, এখন টিউলিপকে স্যার কিয়ের স্টারমারের বরখাস্ত করার সময় এসেছে। তিনি জোর দিয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রী এমন একজনকে দুর্নীতি বন্ধ করতে দিলেন যিনিই এখন দুর্নীর অভিযোগে জর্জরিত।
ব্যাডেনোচ বলেন, টিউলিপ এখন একটি বিভ্রান্তিকর বিষয় হয়ে উঠেছেন। এখন সরকারের উচিত তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার শাসনামলে টিউলিপের যোগসূত্র নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সানডে টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছেন, টিউলিপের ব্যবহৃত সম্পত্তি তদন্ত করে সে সম্পদ বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেয়া, যদি ওই সম্পদ ‘মন ভোলানো ডাকাতির’ মাধ্যমে হয়ে থাকে।
বর্তমানে বৃটেনের অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা টিউলিপ আর্থিক অপরাধ, অর্থ পাচার এবং অবৈধ অর্থায়নের দায়ে অভিযুক্ত। তার খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও এসব অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ২০ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশ শাসন করেছেন। তিনি একজন স্বৈরাচারী শাসক ছিলেন। ভিন্নমত দমনে তিনি ছিলেন নির্মম।
গত আগস্টে দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার একাধিক অপরাধের অভিযোগ এনেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা চিঠিতে টিউলিপ বলেন, সাম্প্রতিক আমি আমার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে পরিবারের যোগসূত্রের জন্য মিডিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছি, যার বেশিরভাগই ভুল।
ওই চিঠিতে তিনি আরও বলেন, আমি স্পষ্ট যে, কোনো ভুল করিনি। তবে সন্দেহ এড়াতে আমি চাই আপনি (লরি ম্যাগনাস) স্বাধীনভাবে এ বিষয়গুলো তদন্ত করুন।
এদিকে স্যার কিয়ের স্টারমার সাংবাদিকদের বলেছেন, তার মন্ত্রীর ওপর তার আস্থা রয়েছে। টিউলিপ নিজেকে তদন্তের জন্য ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণ সঠিক কাজ করেছে বলে মনে করেন স্টারমার।
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
আপনার মতামত জানানঃ