রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব খান ও পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের বহিস্কার ও শাস্তির দাবি করে রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কাটাখালী পৌরসভা শাখার আয়োজনে প্রথম মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে বিকেলে একই দাবিতে পবা উপজেলার বায়া বাজার ও বাগমারা উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের বাগমারা উপজেলা ও জেলা শাখা। মানববন্ধনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব এবং পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কারসহ ষড়যন্ত্রের শিকার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর নাতি মো. রাসেলের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও তার মুক্তির দাবি জানানো হয়।
কর্মসূচিতে অংশ নেয়া মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সদস্যরা জানান, পুঠিয়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর নাতি মো. রাসেল স্ত্রীর দেনমোহর নিয়ে মামলায় পড়লে সমঝোতার দায়িত্ব নেন ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব ও জাহাঙ্গীর আলম। রাসেল দেন মোহরের দুই লাখ টাকা পরিশোধ করলেও এ দুই নেতা আরও ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। রাসেল এই টাকা দিতে পারেননি। টাকার জন্য গত ১৩ জানুয়ারি রাতে রাসেলকে নিজের বাড়িতে ডেকে চাপ দেন হাবিব। কিন্তু রাসেল টাকা দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। আর এ কারণে পুলিশ ডেকে রাসেলকে ধরিয়ে দেন হাবিব ও জাহাঙ্গীর। পরে হাবিব থানায় রাসেলের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেন। এতে অভিযোগ আনা হয়, হাবিবকে খুন করতে রাসেল তার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা এ মামলার সঠিক তদন্ত দাবি করেন। একইসঙ্গে তারা দুই ছাত্রলীগ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নির্যাতনকারীদের কখনোই ছাড় দেয়া যাবে না।
বক্তারা বলেন, পুঠিয়ার শহীদ করম আলীর মতো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতিকে নির্যাতন করে জেলে পাঠানো হয়েছে। এটা দেশের কোন বিবেকবান মানুষই মেনে নেবে না।
এসময় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, নির্যাতনকারী রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব খান ও পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে বহিস্কার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য রাসেলের মামলা প্রত্যাহার করে তাকে মুক্তি দিতে হবে।
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পবা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নাফিউল নেহাল, কাটাখালী পৌর শাখার সভাপতি ওয়ালি আহমেদ নয়ন, সাধারণ সম্পাদক সাগর আলী, উপদেষ্টা তারিক জামিল প্রমুখ।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমি বিষয়টা বুঝলাম না। রাসেল আমার বাড়িতে আমাকেই মারতে এল, আবার আমার বিরুদ্ধেই মানববন্ধন হচ্ছে। রাসেল কেন তাকে মারতে চেয়েছিলেন জানতে চাইলে হাবিব বলেন, এটা তো প্রশাসন দেখবে।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, রাতে রাসেল হাবিবের বাড়িতে ঢুকেছিলেন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে। এমন অভিযোগে রাসেলকে পুলিশে দেয়া হয়। এরপর মামলা করা হয়। তারা রাসেলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এখন ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৪৭
আপনার মতামত জানানঃ