বরিশাল সিটি করপোরেশনসহ বিভাগের ছয় জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কাছে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। বিদ্যুৎ বিভাগ ব্যক্তিমালিকানা ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিল আদায়ে কঠোর হলেও সরকারি দপ্তরগুলোর বকেয়া আদায়ে তেমন ভূমিকা রাখছে না। ফলে দিনে দিনে সরকারি দপ্তরের বকেয়া বিলের পরিমাণ পাহাড় সমান হচ্ছে।
বরিশাল ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) তথ্য মতে, বিভাগের ছয় জেলার সরকারি দপ্তরগুলোয় গত এপ্রিল পর্যন্ত বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৯২ হাজার ৪২৬ টাকা। তবে মে মাসে বিলের পরিমাণ বেড়ে ১০০ কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বরিশাল সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এটিএম তারিকুল হাসান।
এদিকে শুধু বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার ছয়টি দপ্তরেই বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৬৩ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বরিশাল সিটি করপোরেশন, বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, বরিশাল জেলা পুলিশ ও বরিশাল সদর হাসপাতাল। তবে এর মধ্যে কেবল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের কাছে ৬১ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারি দপ্তরগুলো বছরের পর বছর বিল পরিশোধ না করায় সারচার্জসহ বকেয়ার পরিমাণ বাড়ছে। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানগুলোয় দফায় দফায় নোটিস দেয়া হয়েছে। জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর পরও বকেয়া পরিশোধে আগ্রহী হচ্ছে না দপ্তরগুলো। তবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ পেলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে শত ভাগ বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তার পরও বিল পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
ওজোপাডিকো বরিশাল পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম তরিকুল হাসান জানিয়েছেন, তাদের অধীনে বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা রয়েছে। এ তিনটি জেলায় সরকারি দপ্তরগুলোয় চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ৬৬ কোটি ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬৩৭ টাকা। এছাড়া পটুয়াখালী সার্কেলের আওতাধীন সরকারি দপ্তরগুলোর কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ ২৩ কোটি ২৯ লাখ ২২ হাজার ৭৮৯ টাকা। এর মধ্যে বরিশালের দুটি বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের আওতাধীন দপ্তরগুলোয় বকেয়া বিলের পরিমাণ ৭০ কোটি টাকার বেশি।
বরিশাল বিক্রি ও বিতরণ কেন্দ্র-১-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেল কুমার দে জানান, গত এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশন বাদে তাদের আওতায় সরকারি দপ্তরগুলোয় বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৫২ লাখ ৭ হাজার ১৯৪ টাকা। আর বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৬ কোটি টাকার বেশি।
এছাড়া বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে ৪৮ লাখ টাকা, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের কাছে ৩৬ লাখ এবং বরিশাল জেলা পুলিশের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ ৭০ লাখ টাকা। হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের বকেয়া তিন মাসের হলেও বরিশাল জেলা পুলিশের বকেয়া দেড় বছরের।
বরিশাল বিক্রি ও বিতরণ কেন্দ্র-১-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেল কুমার দে জানান, গত এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশন বাদে তাদের আওতায় সরকারি দপ্তরগুলোয় বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৫২ লাখ ৭ হাজার ১৯৪ টাকা। আর বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৬ কোটি টাকার বেশি।
এছাড়া বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে ৪৮ লাখ টাকা, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের কাছে ৩৬ লাখ এবং বরিশাল জেলা পুলিশের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ ৭০ লাখ টাকা। হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের বকেয়া তিন মাসের হলেও বরিশাল জেলা পুলিশের বকেয়া দেড় বছরের।
বরিশাল বিক্রি ও বিতরণ কেন্দ্র-১-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেল কুমার দে জানান, গত এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল সিটি করপোরেশন বাদে তাদের আওতায় সরকারি দপ্তরগুলোয় বকেয়া বিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৫২ লাখ ৭ হাজার ১৯৪ টাকা। আর বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৬ কোটি টাকার বেশি।
এছাড়া বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে ৪৮ লাখ টাকা, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের কাছে ৩৬ লাখ এবং বরিশাল জেলা পুলিশের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ ৭০ লাখ টাকা। হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের বকেয়া তিন মাসের হলেও বরিশাল জেলা পুলিশের বকেয়া দেড় বছরের।
অন্যদিকে বরিশাল বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-২-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক হোসেন জানান, তাদের অধীনে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বকেয়া সিটি করপোরেশনের কাছে। তাদের কাছে ২৫ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। এর বাইরে সরকারি ব্রজমোহন কলেজে গত এক বছরে ৫০ লাখ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। এছাড়া বরিশাল জেনারেল ও টিবি হাসপাতালের কাছে ১২ লাখ, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে ৫ লাখ, ধর্মীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৬ লাখ, ভূমি অফিসের কাছে ২ লাখ এবং কৃষি বিভাগের বকেয়া বিল ২ লাখ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে বরিশাল সিটি করপোরেশনের বকেয়া বিল আদায়ে নগরীর সড়ক বাতি ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিদ্যুৎ বিভাগ। পরবর্তী সময়ে বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যস্থতায় কিস্তিতে বিল পরিশোধের শর্তে বিদ্যুৎ সযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়। এক কিস্তি বিল পরিশোধ করা হলেও পরবর্তী সময়ে আবার বিল দেয়া বন্ধ করে দেয় সিটি করপোরেশন। এ কারণে দ্বিতীয় দফায় আবার সড়ক বাতি এবং পানির পাম্পের সংযোগ কেটে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। পরবর্তী সময়ে সমঝোতা না হলেও সিটি করপোরেশন নিজস্ব ক্ষমতায় সড়ক বাতির সংযোগ দিয়েছে বলে দাবি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের। এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফারুক আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বকেয়া বিল পরিশোধের সক্ষমতা আমাদের নেই। বর্তমানে শুধু চলতি মাসের বিল দেয়া হচ্ছে।’
এদিকে ওজোপাডিকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বরিশাল বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-১-এর অধীনে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ৯২ লাখ ৩ হাজার ৯৭১ টাকা, কৃষি বিভাগের কাছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৭ হাজার ৩৯৮ টাকা, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কাছে ৮ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫৪ টাকা, বাড়ির বিল ৪ কোটি ৪২ লাখ ৭ হাজার ৬৫ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কাছে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১৫ হাজার ৭৭৮ টাকা।
বরিশাল বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-২-এর অধীনে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে শিক্ষা দপ্তরগুলোয় ৫ কোটি ১৫ লাখ ২২৬ টাকা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কাছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭ হাজার ২৪৯ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ বকেয়া।
অন্যদিকে পিরোজপুর জেলা সদর কেন্দ্রের আওতায় প্রতিষ্ঠানে বকেয়ার পরিমাণ ৩৯ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৯ টাকা। পটুয়াখালী সার্কেল কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত মার্চ মাস পর্যন্ত তাদের আওতাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ ছিল ২৩ কোটি ২৯ লাখ ২২ হাজার ৭৮৯ টাকা।
এসডব্লিউএসএস/১৯১৫
আপনার মতামত জানানঃ