ভারতের উত্তর প্রদেশে লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে আইন তৈরি হওয়ার পর খুব দ্রুত এর প্রয়োগ শুরু হয়েছে। উত্তর প্রদেশে প্রথম একটি মামলায় এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবৈধ ধর্মপরিবর্তন অধ্যাদেশকে রাজ্যপাল অনুমোদন দেওয়ার পর লখনউ এর বরেলি থানায় দেবরনিয়ায় ২৮ নভেম্বর প্রথম মামলা দায়ের করা হয়েছিল। উবেশ আহমেদ নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে সে অন্য ধর্মের মেয়েকে প্রলোভন দেখিয়ে জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল।
নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবার অভিযোগের পর পুলিশ রিপোর্ট দায়ের করে অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। ভারতীয় গণমাধ্যমকে পুলিশ জানায়, দেবোরনিয়া এলাকার একটি গ্রামে থাকা এক ব্যক্তি পুলিশে অভিযোগ করে বলেছে যে, পড়াশোনার সময় গ্রামের উবেশ আহমেদ নামের এক যুবক তাঁর মেয়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে।
ওই ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেছিল, উবেশ আহমেদ ভুল বুঝিয়ে আর প্রলোভন তার মেয়েকে ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল। বিরোধিতা করায় যুবতীর বাবা আর তাঁর পরিবারকে মারারও হুমকি দেওয়া হয়। মামলা সামনে আসার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। পুলিশ নিজেদের সোর্স থেকে খবর পেয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ভাষ্য অনুযায়ী, নির্যাতিতার বাবার অভিযোগের পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৫০৪ আর ৫০৬ অনুযায়ী মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি আপাতত পুলিশের হেফাজতে আছে। খুব শীঘ্রই তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
এদিকে এই ঘটনার পর মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি কেউ লাভ জিহাদের মতো কিছু করো তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে। ভারতে কোনও বৈষম্য নেই, কিন্তু কেউ যদি আমাদের মেয়েদের সাথে ঘৃণ্য কোনও কাজ করে, তাহলে ভেঙে দেব। যদি কেউ ধর্মপরিবর্তনের পরিকল্পনা বানায় অথবা লাভ জিহাদের মতো কিছু করতে চায়, তাহলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্বাধীন মধ্যপ্রদেশ সরকার লাভ জিহাদ রোখার জন্য নতুন আইন বিল আকারে প্রস্তাব করেছে। নতুন প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশে ধর্ম লুকিয়ে কারোর সাথে প্রতারণা করে বিয়ে করলে ১০ বছরের সাজার বিধান রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই কাজে সাহাজ্য করা সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করারও কথা বলা হয়েছে। আবেদন ছাড়া ধর্মপরিবর্তন করা ধর্মগুরুদের পাঁচ বছরের সাজার কথা বলা হয়েছে এই আইনে।
ভারতে এই আইনের বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবি ও বিশেষজ্ঞমহলে ক্ষোভ আছে। তারা মনে করেন এই আইনটি সংবিধান বিরোধী এবং মানবাধিকার পরিপন্থী। দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন, এই আইনটির মাধ্যমে ধর্মকে ব্যবহার করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হয়রানী করা হবে।
আপনার মতামত জানানঃ