প্রতিবেশী বৃহৎ রাষ্ট্র ভারত এবার বাংলাদেশের উদীয়মান তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে মনোযোগ দিয়েছে। এ খাতে নিজেদের বিনিয়োগ ও লোকবল বৃদ্ধি করে খাতটি দখলে নিতে চায় বিশ্বপর্যায়ে আইটি খাতে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা ভারত। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা এক অংশ একে আগ্রাসন আর অপর অংশ দেখছে আশীর্বাদ হিসেবে। স্বাধীন উদ্যোক্তারা অধিকাংশই ভারতীয় আগ্রাসনের বিরোধিতার পক্ষে। তবে বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তারা মনে করছে, ভারতের সঙ্গে কাজ করলে আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের সঙ্গে মিলে এগোনো যাবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে ভারত চায় বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে, এমন প্রস্তাবনা এসেছে। ২৪ নভেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক সভাকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এ আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠকে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, ভারতীয় হাইকমিশন ও আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্নিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে মানবসম্পদ উন্নয়ন, আইটি শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারত সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন ১২টি জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্প, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের চলমান অগ্রগতি, আইসিটি খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, স্টার্টআপ তৈরির সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সহযোগিতা দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, বর্তমানে দুই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে আইসিটি সেক্টরে ভারতের বিনিয়োগ বেড়েছে। দেশের ১২টি জেলায় হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পে ভারত সরকার অর্থায়ন করছে। বাংলাদেশ-ভারত আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনে আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আইটি উদ্যোক্তা বলেন, ‘বাংলাদেশে আইটি খাত এখনই ভারতের দখলে রয়েছে। বিনিয়োগ তো করছেই। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশের ঘোষণার অর্থ হলো, এখন থেকে তারাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। তাদের প্রতিষ্ঠান ও বাজারের জন্য যা দরকার, আমাদের সেগুলোতে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। কিন্তু আমাদের জন্য যা দরকার, তা করতে দেয়া হবে না। উল্টো বাধা দেয়া হবে। দেশের আইটি খাতের ভিত্তি শক্তিশালী হয় এমন অনেক উদ্যোগে ভারতীয় পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে আমরা দেখেছি। কিন্তু এখানকার অড় কোম্পানিগুলো চায় ভারতের সাপ্লাইয়ারে পরিণত হতে। তাদের বড় কিছু করার লক্ষ্য নেই, লক্ষ্য শুধু মুনাফা। সাপ্লাইয়ার হতে পারলেই এরা খুশি।’
এসডাব্লিউ/আরা/১১০০
আপনার মতামত জানানঃ