আমাসুঞ্জু হলো রুয়ান্ডার ঐতিহ্যবাহী চুলের স্টাইল। এই স্টাইল পুরুষের পাশাপাশি অবিবাহিত নারীও নিতে পারত। চুলের এই স্টাইল দিয়েই কে বিবাহিত ও অবিবাহিত পরিচয় প্রকাশ পেত। চুলগুলি ক্রেস্টে স্টাইল করা হয় এবং ঘন ঘন ক্রিসেন্ট-আকৃতির হিসাবে বর্ণনা করা হয়।
আমাসুঞ্জুতে চুলের এমন ত্রিশটিরও বেশি স্টাইল রয়েছে যা নারী পুরুষ উভয়ই নিতে পারতেন। এগুলো দ্বারা সমাজে সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ভূমিকা এবং মর্যাদার প্রতীক প্রকাশ পেত। পুরুষদের ক্ষেত্রে শক্তি, সাহসিকতা এবং আভিজাত্যের পাশাপাশি প্রতিপত্তি প্রকাশ পেত এবং নারীদের ক্ষেত্রে এটা তাদের বৈবাহিক অবস্থা এমনকি কুমারিত্বও প্রকাশ পেত। বিয়ের আগ-পর্যন্ত নারীরা চুলের এই স্টাইল নিত। বিয়ের পরে কিছু মহিলা তাদের চুল অবাধে গজাতে দিত।
মেরি বিট্রিস উমুটিসির লেখা একটি বই— ‘সারভাইভিং দ্য স্লটার: দ্য অরডিয়াল অফ অ্যা রুয়ান্ডান রিফিউজি অফ জাইরে’তে একজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি কিছুদিন রুয়ান্ডার কারাগারে এবং বুরুন্ডিতে নির্বাসনে ছিলেন। কারণ কর্তৃপক্ষ তার আচরণকে ধ্বংসাত্মক বিবেচনা করেছেন, কেননা, তার মুখে ঝাঁকবেঁধে দাঁড়ি ছিল এবং আমাসুঞ্জুর রীতিতে চুল না কাটার জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
আমাসুঞ্জু স্টাইলটি ডিজাইন করা হত পাশের কিছু চুল কেটে মাঝ বরাবর বাড়তে দেয়া। কিছু নকশা বৃত্তের মত এবং কিছু দেয়ালের পিছনে দেয়ালের মতো দেখায়। আমাসুঞ্জুর মানুষেরা চুলের কাটে সৃজনশীল হতে পছন্দ করতেন। অনেক গ্রামে সেরা নকশা নির্ধারণের জন্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হত। শিশুরা যে বয়সে এসে নতুন হেয়ার স্টাইল রাখা যায় সেই বয়সের জন্য স্বপ্ন দেখত।
আমাসুঞ্জুর চুলের বাহারি স্টাইল পছন্দের জায়গায় শৈলীর চেয়ে আরও বড় দিক রয়েছে। পূর্ব আফ্রিকান অনুসারে, রুয়ান্ডার শিষ্টাচার শরীরের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে। এই শৈলী শক্তি, স্বাস্থ্যবিধি এবং অবিবাহিত মেয়েদের জন্য কুমারীত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি প্রতিফলিত করতে ব্যবহৃত হয়েছিল। এটি ক্লাস দেখানোর একটি উপায়ও ছিল; শক্তিশালী নেতা, সম্ভ্রান্ত এবং ধনীরা চুলের স্টাইল করতেন।
আমাসুঞ্জু চুলের স্টাইল, যা এখন অনেকটা তার মর্ম হারিয়ে ফেলেছে, যারা ধীরে ধীরে এটিকে রুয়ান্ডার সংস্কৃতিকে গৌরবান্বিত করার একটি উপায় হিসেবে দেখছে তাদের কাছেই জনপ্রিয় হয়ে আছে। আমাসুঞ্জু চুলের স্টাইল উপনিবেশবাদ এবং রুয়ান্ডা-পরবর্তী গৃহযুদ্ধের সময় হারিয়ে গিয়েছিল।
লেখা ও ছবি: https://rarehistoricalphotos.com/
এসডব্লিউ/কেএইচ/১৮১৯
আপনার মতামত জানানঃ