করোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত চব্বিশ ঘণ্টায় এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু আক্রান্তে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আজ মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) একদিনে নতুন করে ৩২৯ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৩০৬ জন এবং ঢাকার বাইরে হাসপাতালে ২৪ জন ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হয়েছে। এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল সোমবার ২২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ছয় হাজার ৬৫০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে পাঁচ হাজার ৫১০ জন।
গত জুলাইয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ২৮৬, যা এ মৌসুমে এক মাসে সর্বাধিক। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করায় এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। পরের বছর তা অনেকটা কমে আসায় হাসপাতালগুলো ১ হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছিল। করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে এখনও মহামারি বলা যাচ্ছে না। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি মহামারি হওয়ার পর্যায়ে আছে। করোনা মহামারির কারণে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো থেকে বিস্তারিত কোনো তথ্য না আসায় সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।
‘ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবং ডেঙ্গু মহামারি প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সিজিএসের চেয়ারম্যান ও কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী এবং মেডিকেল কীটতত্ত্ববিদ ও আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জিএম সাইফুর রহমান। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বক্তারা বলেন, ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি মহামারির দিকেই যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী ডেঙ্গি মহামারির শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে আরেকটা ডেঙ্গু মহামারি হলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এই মহামারি প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। লার্ভা নিধন না করে পূর্ণাঙ্গ এডিস মশা নিধনের প্রতি জোর দিতে বলেছেন তিনি। বিশ্বের অন্যান্য দেশ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এডিস মশার বিস্তার রোধে যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করার দিকে নজর দিয়েছে, সেগুলো আমাদের দেশে প্রয়োগের জন্য তিনি বিশেষ আহ্বান জানান।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২২৩১
আপনার মতামত জানানঃ