২০২৩ এর শুরুর দিকে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ শেষ হবার সম্ভাবনা আরও প্রবল হচ্ছে। এদিকে, দ্য বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) এই সমস্যা সমাধানের উপায় সম্পর্কে অন্যদের একপ্রকার অন্ধকারেই রেখেছে।
যেহেতু বিএসসিসিএল জাতীয় ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার, তাই এই পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।
সূত্র মতে, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি দেশের তৃতীয় সাবমেরিন কেবল এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৬ আসার পরে এই সমস্যার সমাধান হবে, তবে বর্তমান ব্যান্ডউইথের বৈধতা ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হওয়ায় পরবর্তী দুই বছর ব্যান্ডউইথ ছাড়াই কাটাতে হতে পারে।
করোনা পরিস্থিতিতে দেশে ব্যান্ডউইথ ব্যবহার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। কেননা মানুষ দৈনিক অন্তত ৬-৮ ঘন্টার ইন্টারনেট ব্যবহার করে। করোনার আগে যার গড় ছিল ২ ঘন্টা। ইন্টারনেট ব্যবহারের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা সময়ের সাথে আরও বাড়বে। যার বেশিরভাগ ব্যবহার হবে ব্যান্ডউইথ দিয়ে, জানান অপটিম্যাক্স কমিউনিকেশনের পরিচালক ইমদাদুল হক।
পাশাপাশি তিনি হাতাশা প্রকাশ করে বলেন, এমন অবস্থাতেও বিএসসিসিএল কীভাবে তা মোকাবেলা করবে এখনও তা স্পষ্ট করেনি।
তবে বর্তমানে থাকা এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৪ এবং এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫ সাবমেরিন ক্যাবলের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর সুযোগ আছে। কেননা এসইএ-এমই-ডব্লিউই -৪ এর সাথে যুক্ত আছে ভারত, মিয়ানমার ও সিঙ্গাপুর। এরমধ্যে কোন একটি দেশ নতুন ক্যাবল ব্যবহার না করলেই বাংলাদেশ সেখান থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানি করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি) অপারেটররা দাবি করেছেন যে, তাদের ব্যান্ডউইথ আমদানির ক্ষমতা সীমাহীন।
কিন্তু ভারতীয় সাবমেরিন কেবলগুলির ক্ষমতা এবং তারা কতটা ব্যান্ডউইথ বাংলাদেশকে সরবরাহ করতে পারে তার উপর সবকিছু নির্ভর করছে।
সময়মতো ব্যান্ডউইথ না কিনলে ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কম ব্যান্ডউইথের মানে দাঁড়ায় বিদ্যমান ভলিউমের জন্য আরও বেশি ব্যয়। এছাড়া, ভার্চুয়াল ক্লাস, মিটিং এবং ডিজিটাল কমার্সের কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে।
প্রায় ৯৪% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মোবাইল ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল। ব্যান্ডউইটথ কমে গেলে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহারে তা বড়সড় প্রভাব রাখবে বলে জানান মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অফ বাংলাদেশ (এএমটিওবি) এর মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব)।
বাংলাদেশে ছয়টি আইটিসি অপারেটর আছে যারা বিএসসিসিএল এবং বাইরে থেকে ব্যান্ডউইথ নেয়। বিএসসিসিএল-এর ব্যান্ডউইথ হ্রাস পেলে তাদের পুরোপুরি ভারতীয় ব্যান্ডউইথের উপর নির্ভর করতে হবে।
যদিও অপারেটরা আশা করছে তারা ব্যান্ডউইথের ঘাটতি দূর করতে পারবে, তবে এটার জন্য দাম বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আমরা ভারত থেকে চাহিদা পূরণে ব্যান্ডউইথ কিনবো। কিন্তু সমস্যা হলো বিএসসিসিএলের সমস্যা সমাধানের আগে ভারতের উপর পুরোপুরি নির্ভর করায়, তারা সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দিতে পারে বলে জানান সুমন আহমেদ সাব্বির, ফাইবার হোম লিমিটেডের চিফ টেকনোলজি অফিসার।
এদিকে, বিএসসিসিএল এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৪ এর ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি বাইরে থেকে ৬০০ জিবিপিএস নতুন ব্যান্ডউইথ কিনবে।
এটি এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫ এর ধারণক্ষমতা বৃদ্ধিরও পরিকল্পনা করছে। ২০২২ সালের মধ্যে এর ধারণক্ষমতা ২ হাজার ৫০০ জিবিপিএস বাড়ানো হবে।
বিএসসিসিএল অনুসারে, দেশে ২,৬০০-২,৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হয়, যা শীঘ্রই ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। বিএসসিসিএলের দুইটি সাবমেরিন কেবলের ধারণক্ষমতা ২ হাজার ৮০০ জিবিপিএস।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৯২৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ