নেছারাবাদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিজানুর রহমান সিকদার (৪২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১ এপ্রিল রাতে গ্রেপ্তারের পর গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, মিজান তার ফেসবুক আইডিতে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিকৃত ছবি পোষ্ট করেন। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের নজরে এলে প্রশাসনকে জানানো হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নিয়ে স্থানীয় ইদিলকাঠী বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে নেছারাবাদ থানা পুলিশ। মিজানুর রহমান সিকদার ওরফে হাতকাটা মিজান উপজেলার আরামকাঠী গ্রামের বজলুর রহমান সিকদারের ছেলে। পেশায় নাম মাত্র কাঠ ব্যবসায়ী।
ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন প্রকার পদ্ধতি অবলম্বন করে মোবাইল ট্রাকিং এর মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২০১৮এর ২৮(১,২)/২৯(১,২)/ ৩১(১,২) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা রজু করা হয়েছে। তাকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের দায়ীত্ব দেওয়া হয়েছে এস আই মো. হুমায়ুন কবিরকে।
এদিকে, সংবিধানে নিশ্চয়তা থাকলেও বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অনেকটাই সংকুচিত বলে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ। বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার (৩০মার্চ) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নিয়ে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার ২০১৮ সালে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে মহামারি মোকাবেলায় সরকারের সমালোচনাকারী ব্যক্তিদের শায়েস্তা করতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সম্প্রতি বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আইনটি পর্যালোচনা করা হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে তদন্তের আগেই যেন গ্রেফতার করা না হয়, এমন ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি মিডিয়া ওয়াচডগ বডি আর্টিকেল ১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৯৮টি মামলায় ৪৫৭ জনকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে ও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ৪৫৭ জনের মধ্যে ৭৫ জন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে ৩২ জনকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা— এটা আমাদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। যে অধিকার আইন করেও খর্ব করা যায় না। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আইনটি নিয়ে বিতর্ক বা সমালোচনার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তির ওপর দেশে ও বিদেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯১০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ