জুম মিটিংয়ে জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং স্বাধীনতার ঘোষক বলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ২৫ জনকে আসামি করে সুনামগঞ্জ আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
সোমবার (২২ মার্চ) সকালে আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতে মামলাটি করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা মইনুল ইসলাম। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আক্তারুজ্জামান সেলিম।
আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, তারেক রহমানসহ অন্য আসামিরা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ও প্রচারণা চালিয়ে এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ও ডিজিটাল ম্যাধমে আক্রমণাত্মক মিথ্যা তথ্যউপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ ও প্রচার করে বাংলাদেশের সংবিধান, স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তারেক রহমানসহ অন্য আসামিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অপমান করেছেন, হেয় করেছেন ও তাকে ছোট করেছেন। তারেক রহমান তার ইউটিউব চ্যানেলে তার বাবা জিউয়ার রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে বক্তব্য রেখেছেন। তারেক রহমানসহ অন্য সব আসামিরা যোগসাজশে এসব অপকর্ম ও অপরাধ করেছেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া হাসনরাজা জাদুঘরের সামনে অপেক্ষারত অবস্থায় তিনি তারেক রহমানের ইউটিউব চ্যানেলে এসব অপরাধ প্রচারের বিষয়টি দেখেছেন। বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে সময় অতিবাহিত হওয়ায় মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।
এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। রাজধানীর শাহবাগ থানার মামলাটি করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দেশের স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে তারেক রহমান জাতির জনককে নিয়ে অসত্য, মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালিয়েছেন। এতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে তারেক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এজাহারে বাদী বলেন, তিনি তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে টিএসসিতে বসে ছিলেন। এ সময় তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেওয়া তারেক রহমানের বক্তব্যের লিংক আসে। ওই বক্তব্যে তিনি জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা বলে উল্লেখ করেন।
জাহিদুল ইসলামের অভিযোগ, ইতিহাস বিকৃতির এই বক্তব্য তারেক রহমান ইচ্ছাকৃতভাবে দিয়েছেন। জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য এই বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি মিডিয়া ওয়াচডগ বডি আর্টিকেল ১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৯৮টি মামলায় ৪৫৭ জনকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে ও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ৪৫৭ জনের মধ্যে ৭৫ জন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে ৩২ জনকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪২৭
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ