চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ইয়াবা দিয়ে এক গৃহবধুকে ফাঁসানোর অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রাসেল, ৬ পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনে বিরুদ্বে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (৭মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়সার এর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন তাছমিনা আক্তার নামে এক নারী।
আসামীরা হলেন- হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আরিফুর রহমান রাসেল (৩২), হাটহাজারী থানার এসআই মুকিব হাসান, এসআই মোঃ সেলিম মিয়া, এসআই কফিল উদ্দীন, কনস্টেবল মোঃ পারভেজ, কনস্টেবল মোঃ সাইফুল, নারী কনস্টেবল বৈশাখী রহমান, পুলিশের সোর্স মোঃ রিংকু সুলতান (২৫), মোঃ হেলাল উদ্দীন ও মোঃ হেলাল (৩৫)।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বাদীর বক্তব্য গ্রহন করেন। বাদীর আইনজীবী মোঃ ইলিয়াস জানান, পারিবারিক অশান্তি ও সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ না পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফের শরণাপন্ন হন বাদী। এ সুযোগে মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে বাদীর সাথে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা সদরের একটি গেস্ট হাউসে ধর্ষণের পর সেখানে পুলিশ সদস্যরা তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দীর্ঘ ৬ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে রবিবার আদালতে মামলা দায়ের করেন বলে জানান বাদী তাছমিনা আক্তার।
বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ ইলিয়াস গণমাধ্যমকে জানান, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৩ ও ১৫ ধারায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাটহাজারী থানার এসআই কফিল উদ্দিন। তিনি বলেন, মামলা থেকে বাঁচার জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন বাদী। অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুরের মুঠোফোনে আজ বেলা সোয়া দুইটার দিকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের ভূমিকায় মানুষের নিশ্চিন্ত থাকার কথা থাকলেও এখন আতঙ্কে ভোগেন। দেশে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, ধর্ষক ও ডাকাতির ভূমিকায় নেমে পড়া পুলিশ বাহিনী নিয়ে দেশে এক রকম আতঙ্ক চলছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের সরাসরি ডাকাতিতে নেমে পড়ায় উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য দিনদিন চাউর হয়ে উঠছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে ক্ষমতার চূড়ান্তে বসবাস করেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগ্রহবোধ না করায় তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে চলেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপসহ মানবাধিক সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। অতি শীঘ্র অসহায় মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়ে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করার আহ্বান জানান।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০৪০
আপনার মতামত জানানঃ