সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে এবং বিদেশে অর্থপাচার বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান এবং সুবীর নন্দী দাস এই রিট দায়ের করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাণিজ্য সচিব,পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৫ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
আবেদনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংবাদপত্রের এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে।
আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, সুইস ব্যাংকসহ বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম ও আমি রিটটি দায়ের করেছি।
আবেদনটির ওপর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, এ রিটের একটি অনুলিপি পেয়েছি।
রিট আবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশি ব্যাংকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে বিবাদী চরম ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
একইসঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের অতীতের এবং বর্তমানে এই ধরনের অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি স্পেশাল কমিটি গঠনের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাচারের বিষয়ে তথ্য থাকলে তা প্রকাশ করে পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের প্রতি নোটিশ জারির আবেদন করা হয়েছে।
সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচার হওয়ার পর এর তথ্য জেনে বাংলাদেশে তা ফেরত আনার ক্ষেত্রে তৎপরতায় এখনও দুর্বলতা রয়েছে।
অর্থ পাচার বন্ধের জন্য গঠিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচার এবং সেই অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না থাকায় পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না। যে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে, এটার প্রবাহ বন্ধ করা এবং অর্থ ফিরিয়ে আনা-এই দু’টোর জন্যই যে ধরণের রাজনৈতিক এবং আইনি কাঠামো দরকার, সেটা আমাদের এখানে অনুপস্থিত রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অর্থ পাচার নিয়ে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে দূর্বলতা আছে। বিশ্বব্যাপী যে আজকাল টাকার চলাফেরা হচ্ছে আন্ডার গ্রাউন্ডে বা ওভার গ্রাউন্ডে, সেখানে আমাদের মতো একটা অর্থনীতি বা ব্যবস্থাপনার পক্ষে তা তন্ন তন্ন করে ফলো আপ করার ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্বলতাও আছে। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতেই শুধু নয়, এখন কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ফলে কঠোর বার্তা না থাকায় টাকা পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না।
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/২৪২৮
আপনার মতামত জানানঃ