আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন কর্মদিবস অর্থাৎ ১৮, ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন না হলে আগামী শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) থেকে মেট্রোরেল সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই হুমকি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটিতে সরাসরি উন্মুক্ত নিয়োগের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা প্রণয়নে জোরালো দাবি জানানো হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খসড়া চাকরি বিধিমালার ওপর বিশদ আলোচনা করে ও খসড়া চাকরি বিধিমালা সংশোধন সাপেক্ষে দ্রুত বোর্ড মিটিং আয়োজনের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন করবে বলে আশ্বাস দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নির্দেশনা মোতাবেক (স্মারক নং-২৮.০০.০০০০.০০০,৬০,০০১.২৪.১২২, তারিখ-১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর (খ) অনুসারে) স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে ডিএমটিসিএল ৬০তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত (৭.৬, ৮.৩৫৯.৩) অনুযায়ী ৬০ (ষাট) কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠানোর নির্দেশনা ছিল। তবে প্রায় পাঁচ মাস পার হলেও আজ অবধি তা প্রণয়ন করা হয়নি।
স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা না থাকায় ডিএমটিসিএলের ২০০ জনের বেশি দেশি ও বিদেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এতে মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়ন না হলে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেট্রোরেল সেবা বন্ধ থাকবে এবং ঢাকাবাসী মেট্রোরেল সেবা থেকে বঞ্চিত হলে ডিএমটিসিএল–সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চূড়ান্তভাবে দায়ী থাকবে।
ডিএমটিসিএল’র কর্মীরা জানান, ২০১৩ সালের ৩ জুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এক যুগ পার হলেও এখনও চাকরিবিধি প্রণয়ন করেনি ডিএমটিসিএল। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্য, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিশ্চয়তার শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। সেইসঙ্গে পূর্ণাঙ্গ প্রাতিষ্ঠানিক বিধিবিধান না থাকায় যাত্রীসেবার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও দাবি তাদের।
তারা আরও জানান, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরিবিধি প্রণয়নের নির্দেশনা দেন। তবে ৫ মাস অতিবাহিত হলেও, রহস্যজনক কারণে তা এখনও প্রণীত হয়নি।
ডিএমটিসিএল কর্মীদের দাবি, চাকরিবিধি না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির ২০০ জনেরও বেশি দেশি ও বিদেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ