আপনি জানেন কি? বিশ্বজুড়ে এমন কয়েকটি স্থান রয়েছে যেখানকার রহস্য ভেদ করা প্রায় দুঃসাধ্য! এসব অঞ্চলগুলো রহস্যে মোড়া, রোমাঞ্চে ভরপুর। কোথাও বালির নীচে গ্রাম তো কোথাও আবার ভূতের বাস।
শেতপাল, মহারাষ্ট্র
আপনি কি সাপ পছন্দ করেন? ভাবছেন নিশ্চয় এ আবার কীরকম প্রশ্ন! সাপ আবার পছন্দের করার মতো কোনো প্রাণী নাকি! কিন্তু যদি বলি এমনও সাপ আছে, যারা বেজায় নীরিহ এবং ভাল সাপ গোছের, তাহলে? কী বিশ্বাস হচ্ছে না তো? তাহলে ঘুরে আসুন মহারাষ্ট্রের শেতপাল গ্রাম। এই গ্রামে মানুষের সঙ্গে সাপের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখলে অবাক হয়ে যাবেন।
কোবরার সংখ্যা দেখলে মাথা ঘুরে যাবে। এখানকার প্রতিটা বাড়ি সাপেদের আশ্রয় দেয়। তারাও দিব্যি সারাদিন ঘোরাঘুরি করে দিনের শেষে নিজেদের আস্তানায় ফিরে আসে। সাপে কামড়েছে এমন কথাও মোটে শুনতে পাবেন না এই গ্রামে। তবে সাহস করে আবার আদর করতে যাবেন না যেন!
চামলি, উত্তরাখণ্ড
সমুদ্র থেকে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার ফিট ওপরে হিমালয় পাহাড়ে ঘেরা চামলি। পৃথিবীর অন্যতম বিপজ্জনক জায়গা বলে এর বদনাম আছে। যারা রোমাঞ্চ ভালোবাসেন তাদের জন্য অবশ্য দারুণ। সেখানকার রূপকুণ্ড জলাশয়ে পৌঁছালে দেখতে পাবেন সারি সারি কঙ্কাল পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে। শীতকালে অবশ্য পানি জমে বরফ হয়ে যায়। কিন্তু যেই এই পানি গলতে আরম্ভ করে, এক এক করে কঙ্কাল ওপরে ভেসে ওঠে।
রেডিয়োকার্বন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, কঙ্কালগুলোর বয়স অনেক। গবেষকদের অনুমান, ১৪ শতকে কনৌজ এর রাজা-রানি ও সেপাই সামন্তরা কোনো এক উৎসবে সামিল হতে যাওয়ার সময় রাস্তা হারিয়ে ফেলেন। এই কঙ্কালগুলো তাদেরই মড়দেহ। সে যাই হোক, এই দৃশ্য যে কতটা ভয়াবহ তা নিশ্চয় আন্দাজ করতে পারছেন। যাবেন নাকি? ভেবে দেখুন।
তালাকাড়ু, কর্নাটক
কাবেরী নদীর ধারের ছোট্ট গ্রাম তালাকাড়ু। আর এই পুরো গ্রামটাই ডুবে আছে বালির তলায়। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন প্রায় ৩০টি মন্দির আছে এই গ্রামে এবং তা পুরোটাই বালির নীচে। পুরাণ মতে, শিবের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী এই স্থানটিকে অভিশাপ দেন এবং মরুভূমিতে পরিণত করেন।
শনি শিগনাপুর, মহারাষ্ট্র
রাতে শোওয়ার আগে আমরা সবাই ভালো করে দরজা বন্ধ করি। কিন্তু এই গ্রামে তার প্রয়োজনই পড়ে না। কেন? কারণ এখানে কোনো বাড়িতেই না আছে দরজা আর না তালা লাগানোর ব্যবস্থা। আর শুধু বাড়ি কেন, স্কুল, দোকানপাট কোথাওই কোনো দরজা খুঁজে পাবেন না আপনি।
অথচ সেখানে চুরিচামারি বা অন্য কোনো অপরাধ মোটে হয় না। গ্রামের বাসিন্দারা মনে করেন দরজা নেই বলেই তাদের ওখানে অপরাধ হয় না। কারণ সবাই একে অপরকে বিশ্বাস করেন এবং সেই বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে জানেন।
কেরলের কোদিনহিতে যেন যমজ শিশুর মেলা
সিনেমায় যমজ বোন বা যমজ ভাই-এর কাণ্ড কারখানা দেখে হেসে গড়িয়ে পড়েন। কিন্তু যদি দেখতে পান, আপনার আশেপাশের সবাই যমজ, তাহলে? কেরলের কোদিনহি-তে ঠিক এমন দৃশ্যই দেখতে পাবেন।
এখানে বসবাসকারী ২ হাজারটি পরিবারের মধ্যে ৪০০ জনের যমজ ভাই বা বোন আছে। ট্রিপলেটের সংখ্যাও প্রচুর। প্রায় ১৫ জোড়া যমজ বাচ্চা প্রতি বছর এখানে জন্মায়। বিজ্ঞানীরা এত দিনেও বুঝে ওঠতে পারেনি এই অবাক করার মতো ঘটনার কারণ ঠিক কী?
ভুতূড়ে গ্রাম কুলধারা
ভুতূড়ে গ্রাম নামেই পরিচিত রাজস্থানের কুলধারা। একটা সময় একেবারে জমজমাট ছিল এই গ্রাম। রাতারাতি জনমানবশূন্য হয়ে যায়। শোনা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে নাকি ১৫০০ পালিওয়াল ব্রাহ্মণ এখানে থাকতেন। হঠাৎই তারা ঠিক করেন আর এই গ্রামে থাকবেন না। তল্পিতল্পা গুটিয়ে ভোর হতেই তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যান।
এরপর যতবার সেখানে কেউ থাকার চেষ্টা করেছেন, ততবার অসফল হয়েছেন। মনে করা হয়, সেখানে দুরাত্মারা থাকে। তারাই কাউকে এখানে বসবাস করতে দেয় না। অনেক পর্যটকই বলেছেন, গ্রামে প্রবেশ করলে এক ধরনের অস্বস্তি হয় তাদের।
আপনার মতামত জানানঃ