মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির পাশপাশি প্রবৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকির বিষয়ে সর্তক করে গেল ঢাকা সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশকে মঞ্জুর করা ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচির অধীনে দলটির ঢাকা সফর মিশন আজ শেষ হয়েছে।
সফর শেষে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আইএমএফ জানিয়েছে, ‘অবিরাম মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর অর্থনীতিতে ধীরগতি বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং টাকার মানের ওপর প্রভাব ফেলবে।’
আইএমএফ তার এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (বর্ধিত ঋণ সুবিধা), এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (বর্ধিত তহবিল সুবিধা) এবং রিজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাস্টেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটি (স্থিতিস্থাপক ও টেকসই সুযোগ-সুবিধা) ব্যবস্থাগুলোর প্রথম পর্যালোচনা চলতি বছরের শেষ নাগাদ পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এদিকে, আগামী সপ্তাহে দুই মাসের আমদানি বিল পরিশোধের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৯.৮৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে, যা বিগত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
পোশাকের খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার কমে যাওয়ায় গেল বছরের তুলনায় এ বছরের এপ্রিলে রপ্তানি ১৬.৫ শতাংশ কমে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। অন্যদিকে, কমেছে রেমিট্যান্স প্রবাহও। অর্থনীতির ঘাটতি সামাল দেওয়া রেমিট্যান্সের পরিমাণ এপ্রিলে ১৬ শতাংশ কমে ১.৬৮ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণের প্রথম কিস্তি হিসেবে ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার কথা রয়েছে এ বছরের নভেম্বরেই।
ঋণের বিষয়ে পর্যালোচনা করতে গত ২৫ এপ্রিল থেকে আজ ৭ মে পর্যন্ত ঢাকা সফরে আসে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। দলটির কাছে বিনিময় হারের ক্ষেত্রে আরও নমনীয়তা এবং ব্যাংক ঋণের সুদহারে সংস্কার আনার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটকালেও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। তবে সামনে বাংলাদেশের বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ দেখতে পাচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। রোববার (৭ মে) সফর শেষে আইএমএফের বাংলাদেশ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ এক লিখিত বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে রাহুল আনন্দ বলেছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর অর্থনীতির ধীর গতি বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এবং টাকার মানের ওপর প্রভাব ফেলবে।
তিনি আরও বলেন, সফরের সময় আমরা সাম্প্রতিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিকখাতের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা তহবিল-সমর্থিত প্রোগ্রামের অধীনে মূল প্রতিশ্রুতি পূরণের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করেছি। এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) বা রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) ব্যবস্থার প্রথম পর্যালোচনায় এটি আনুষ্ঠানিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে, যা এ বছরের শেষের দিকে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, আইএমএফ প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এছাড়াও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, দ্বিপাক্ষিক দাতা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আন্তরিক আলোচনা ও উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। বাংলাদেশ এবং এ দেশের জনগণের সমর্থনে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখতে আমরা উন্মুখ।
রপ্তানি আয় বাড়ানোর পরামর্শ
চলমান বৈশ্বিক সংকটের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই রপ্তানি আয় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। রপ্তানির প্রধান গন্তব্য ইউরোপ-আমেরিকার মতো বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়ায় সেখানে রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সেই চ্যালেঞ্জ সামলে নিয়ে কিভাবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা যায় সে বিষয়ে করুণীয় নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানিতে ডলার রেট একই হারে নির্ধারণের তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
আইএমএফ প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে। কিন্তু আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী এখনো নিট রিজার্ভ ৩ বিলিয়ন ডলার কম আছে। এ অবস্থায় আগামী জুনের মধ্যে কিভাবে এই রিজার্ভ সংগ্রহ করা সম্ভব হবে? এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনিটরিং করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্যই এ ব্যাপারে তাদের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে বিগত কয়েক বছরের হিসেবে যদি পর্যবেক্ষণ করা হয় তাহলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের নিট রির্জাভ যথেষ্ট শক্তিশালী অবস্থানে ছিল। চলমান বৈশ্বিক সংকট বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। তবে এই পরিস্থিতিতেও রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স আদায়ে সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে সরকার। বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স বাড়ছে।
আশা করা হচ্ছে, রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স বাড়বে। এ ছাড়া আইএমএফের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়Ñ রপ্তানিকারকরা বিদেশে তাদের ডলার রেখে দিচ্ছেন, আন্ডার ইনভয়েসিং হয় এবং ডলার পাচার করার মতো ঘটনাও ঘটছে কি না? এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- এসব তথ্য সঠিক নয়। এসব বিষয়ে সরকার কঠোর এবং কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছে।
সূত্র মতে, আইএমএফ সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রপ্তানি আয় কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রা ডলার বিশেষ করে রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে। এ অবস্থায় অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্যের আমদানি ব্যয় কমিয়ে ডলার সাশ্রয় করা যায় কি না সে বিষয়েও জানতে চায় আইএমএফ। তবে ইতোমধ্যে ডলার সাশ্রয়ে এসব বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পরে এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের জানান, আইএমএফের জানার বিষয় ছিল মূলত রপ্তানি খাত নিয়ে।
এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানিতে ডলার একই হারে নির্ধারণ করা যায় কি না সে বিষয়েও তারা কথা বলেছে। তিনি জানান, চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে আগামীতে রপ্তানি আয় কিছুটা কমে যেতে পারে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হয়তো রপ্তানি হবে না। এ বিষয়টি আইএমএফকে অবহিত করা হয়েছে। তবে রপ্তানি আয় বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়েও তাদের অবহিত করা হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে নতুন বাজার জাপান, ভারত, লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ছে। তবে এটা ঠিক দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান গন্তব্যস্থল আমেরিকা ও ইউরোপে এখন মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণে সেখানকার মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এ কারণে সেখানে রপ্তানি কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তবে রপ্তানিকারকদের সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে নীতিগত সহায়তা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন, ফি কমানো, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে শুল্ক ও ভ্যাটজনিত সুবিধা প্রদান, বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের মতো কাজ করা হচ্ছে। এর বাইরে রপ্তানি বাড়াতে বিভিন্ন প্রমোশনাল কাজ করছে সরকার। বাণিজ্য সচিব বলেন, সরকারি এসব উদ্যোগের ফলে রপ্তানি আযের প্রবৃদ্ধি বছর শেষে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণে বাংলাদেশের প্রস্তুতি, উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পদক্ষেপ, ট্যারিফ কাঠামো যৌক্তিকীকরণ, পণ্যের বহুমুখীকরণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। এলডিসি তালিকা থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করেছে আইএমএফ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রপ্তানি সুবিধা অব্যাহত রাখতে বিশেষ করে জিএসপি প্লাস পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সে বিষয়টি আলোচনায় তোলে আইএমএফ। বলা হয়, ওই সময়ে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রদত্ত সুবিধা অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সংঘটিত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ।
উত্তরণ পরবর্তী সময়ে যাতে সুনির্দিষ্ট দেশের বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা বজায় থাকে, সে জন্য পিটিএ, এফটিএ ও আরটি করার প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ কোন কোন দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে কোন ধরনের চুক্তি করতে যাচ্ছে এবং তার আলোচনা ও সম্ভাব্য অগ্রগতি কতটুকু, সেটি জানতে চায় আইএমএফ। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ উৎপাদকদের সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ডব্লিউটিওর বাউন্ড রেটের অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করেছে। এটি কমিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনাও জানতে চায় আইএমএফ। বৈঠকে সংস্থাটির প্রতিনিধিরা পর্যবেক্ষণ দিয়ে বলেন, বৈশ্বিক সংকটে মানুষের ভোগ ও ব্যবহার চাহিদা দুটোই কমতে শুরু করেছে। এটি দীর্ঘায়িত হতে পারে।
আইএমএফ মনে করে, একক রপ্তানি পণ্য হিসেবে তৈরি পোশাকের ওপর রপ্তানি আয়ের অতিনির্ভরতা বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। এ অবস্থায় রপ্তানি ঝুঁকি কমাতে তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে পণ্যের বহুমুখীকরণে সুনির্দিষ্ট পণ্যভিত্তিক পদক্ষেপ দরকার।
এদিকে, নিয়মিত রুটিন সফরের অংশ হিসেবে আইএমএফ স্টাফ মিশনের প্রতিনিধি দল এখন বাংলাদেশ সফর করছে। তবে যেহেতু এখন তাদের ঋণ প্রদানের মতো প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে এ কারণে ঘুরে ফিরে ঋণের শর্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফ। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনান্দ। তিনি সোমবার রাতে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছেন।
আগামী ৭ মে পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন। এর আগে প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন বৈঠকে অংশগ্রহণ করলেও তিনি ওয়াশিংটনে ছিলেন। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাতে তিনি এতদিন ওয়াশিংটনে ছিলেন। বাংলাদেশ সফরে এসেই তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠক করলেন। আগামী কয়েকদিনে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তার অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গেও রাহুল আনন্দের বৈঠকের কথা রয়েছে।
৫০ বছরের প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারাবাহিক তথ্য চায় আইএমএফ
সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি (কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স), জিডিপি গ্রোস ডমেস্টিক প্রডাক্ট) এবং ত্রৈমাসিক জিডিপির তথ্য দেয়ার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চেয়েছে আইএমএফ। এ বিষয়ে আইএমএফ- কে অবগত করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। স্বাধীনতার পর থেকে বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারাবাহিক তথ্যও চেয়েছে আইএমএফ। মঙ্গলবার বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধি দল এ তিনটা বিষয়ে জানতে চান।
বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদনের প্রায় তিন মাস পর ঢাকায় স্টাফ কনসালটেশন মিশন পাঠায় আইএমএফ)। এ প্রসঙ্গে মতিয়ার রহমান বলেন, জিডিপি তথ্য স্বাধীনতার পর থেকে বই আকারে প্রকাশ করবো, তাই করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির নতুন মেথডের বিষয়ে জানতে চেয়েছে, আমরা এ বিষয়ে অবগত করেছি। তিনি আরও বলেন, আইএমএফ মূল্যস্ফীতির নতুন মেথডে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চেয়েছে। মূল্যস্ফীতির হিসেব যেভাবে করি এ পদ্ধতিতে আর করছি না, এটার পরিবর্তন হচ্ছে। এখন সারাবিশ্বে ৯৫ শতাংশ দেশ আইএমইফ মিক্স ম্যাথডে মূল্যস্ফীতি বের করছে। খাবার ও নানা পণ্যে নতুন নতুন আইটেম নিয়ে আসছি। নতুন করে ফুড ড্রিংস নিয়ে এসেছি নতুন মূল্যস্ফীতিতে খাদ্যপণ্য ১৫৩ এর জায়গায় ২৬৩টি হবে। ৭২০ পণ্য মিক্সড ম্যাথডে স্থান পাবে। নতুন মেথডে সিপিআই প্রকাশ হবে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৫৫৫
আপনার মতামত জানানঃ