মেয়ে যখন সাইকেলে চড়ে কোচিং থেকে ফিরছিলেন তখন তার পথ আটকায় পাড়ার তিন যুবক। তারপর তারা ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে।
এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ছাত্রীর বাবা। সেখানে গেলে তার সামনেই মেয়েকে অশ্লীল ভাষায় ডাকা হয়। সেটার প্রতিবাদ করলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
বাবার সামনেই মেয়েকে অশ্লীল ভাষায় কটূক্তি করে কয়েকজন যুবক। তখন তারই প্রতিবাদ করেছিলেন মেয়েটির বাবা। এই প্রতিবাদের প্রতিশোধ নিতে মেয়ের সামনে বাবাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল এলাকারই তিন যুবকের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে হাওড়ার শ্যামপুরে। ইতিমধ্যেই ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার।
ঠিক কী তথ্য পেয়েছে পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েটির শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করেছিল ওই যুবকরা। সেটায় বাধা দেয় তার বাবা। তখন অশ্লীল মন্তব্য করলে প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন তার বাবা।
তখনই মারধর করা হয় তাকে। আর তার জেরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। তিনি শ্যামপুরের বাসিন্দা। তার মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী। কোচিং থেকে বাড়ি ফেরার সময় এই ঘটনা ঘটেছে। যুবকদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়ে গিয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যাবেলায় মেয়ে যখন সাইকেলে চড়ে কোচিং থেকে ফিরছিলেন তখন তার পথ আটকায় পাড়ার তিন যুবক। তারপর তারা ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে। এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ছাত্রীর বাবা। সেখানে গেলে তার সামনেই মেয়েকে অশ্লীল ভাষায় ডাকা হয়।
সেটার প্রতিবাদ করলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে শ্যামপুরের গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের অভিযোগ ঠিক কী? শ্যামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। নিহতের মেয়ের অভিযোগ, ‘সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় তিন যুবক আমার হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে। আর খারাপ ভাষায় আমাকে ডাকে। তখন আমার চিৎকার শুনে বাবা ছুটে আসে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে ওরা বাবাকে টেনে নিয়ে মারধর করতে থাকে।’
নিহতের স্ত্রী জানান, স্বামী প্রত্যেকদিনই মেয়েকে কোচিং থেকে আনতে যান। রবিবারও গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার সময় টিন্টন, টিটন এবং শান্তনু নামে এলাকার তিন যুবক এই কাজ করে মেয়ের সঙ্গে। সেটার প্রতিবাদ করলে স্বামীর উপর হামলা চালানো হয়।
ভারতে ক্রমাগতভাবে বাড়ছে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা। সাম্প্রতিক সময়ের তথ্য পাওয়া না গেলেও পাওয়া গেছে দু বছর আগের পরিসংখ্যান। সূত্র মতে, করোনা ভাইরাসের মহামারির মধ্যেও ভারতে ধর্ষণ-গণধর্ষণ একটুও কমেনি বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও বেড়েছে। নারী নির্যাতনের দিক দিয়েও বেশ এগিয়ে ভারত।
প্রতিদিন গড়ে ৭৭ জন নারী ধর্ষণ শিকার হচ্ছে। দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৮০ জন খুনের শিকার হন। গত তিন বছরে দেশটিতে শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যার তীব্র বৃদ্ধি ঘটেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০-তে দৈনিক গড়ে ৭৭ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সবমিলিয়ে ২০২০-তে ২৮,০৪৬ ধর্ষণের ঘটনা নথিভূক্ত হয়েছে। নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা ২০২০-তে আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমে হয়েছে ৩,৭১,৫০৩। ২০১৯-এ এই সংখ্যা ছিল ৪, ০৫,৩২৬। ২০১৮-তে এই সংখ্যা ছিল ৩,৭৮,২৩৬।
২০১৯-এর তুলনায় অপহরণ ও তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ২০২০-তে ১৯ শতাংশ কমেছে। ২০২০-তে অপহরণ ও তুলে নিয়ে যাওয়ার মতো মামলার সংখ্যা ৮৪,৮০৫। এনসিআরবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-এ এই সংখ্যা ছিল ১,০৫,০৩৬।
রিপোর্ট অনুসারে, দিল্লিতে ২০২০-তে অপহরণ ও তুলে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার মামলার সংখ্যা ছিল ৪,০৬২। রিপোর্ট অনুসারে, ২০২০-তে ৮৪,৮০৫ টি অপহরণের মামলার শিকারের সংখ্যা ছিল ৮৮,৫৯০। এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ৫৬,৫৯১ জন ছিল শিশু। বাকিরা প্রাপ্তবয়স্ক।
এসডব্লিউএসএস/১৮৪৫
আপনার মতামত জানানঃ