সাতটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামে একটি রাজনৈতিক জোট আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। সোমবার (৮ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)-এর সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর আত্মপ্রকাশ ঘটে।
জোটভুক্ত দলগুলো হলো—জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব এই মঞ্চের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এই মঞ্চ গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্র, সংবিধান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারব্যবস্থা নিয়ে মঞ্চের সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাবসহ দাবি রয়েছে।
জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ষড়যন্ত্র নয়, প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই সরকারবিরোধী আন্দোলনে যাবে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারবিরোধী লড়াই-সংগ্রামের বিকল্প নেই।
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে আগামী দিনের সংগ্রামে অংশ নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’র রূপরেখা তুলে ধরে ১১ তারিখের কর্মসূচি ঘোষণা করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এই মঞ্চ গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্র, সংবিধান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারব্যবস্থা নিয়ে মঞ্চের সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাবসহ দাবি রয়েছে।
নতুন এ জোটের ঘোষিত রূপরেখায় বলা হয়, আগামী দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে এবং একটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
রাষ্ট্রের তিন অঙ্গ- সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও সরকারের জবাবদিহিতার কার্যকরী ব্যবস্থা গড়ে তোলা; সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার এবং একইসঙ্গে ফেডারেল পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতীয় কমিশন গঠনের বিষয়গুলোও রূপরেখায় উঠে এসেছে।
রূপরেখায় আরো বলা হয়, বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, নিম্ন আদালতকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে তার পরিচালনা ও তদারকি উচ্চ আদালতের হাতে ন্যস্ত করা, প্রধান বিচারপতিসহ বিচারক নিয়োগ ও পদোন্নতি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতিতে রাষ্ট্রের সব নাগরিকের জীবন ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির টেকসই প্রকৃতিবান্ধব ভিত্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব জনগণের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাউয়ূম।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬৩৪
আপনার মতামত জানানঃ