২১০০ সাল থেকে পরবর্তী ৪০০ বছরের মধ্যে আমাদের এই পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। মানবসভ্যতার কাছে হয়ে পড়বে আরও একটি ভিনগ্রহ। খুব দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকবে না।
এই হুঁশিয়ারি দিলেন জাতিসংঘের বিজ্ঞানীরা। তাদের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে; যার নাম ইউনাইটেড নেশন্স অ্যাসেসমেন্ট অব ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন্স। সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘গ্লোবাল চেঞ্জ বায়োলজি’-তে।
ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন রাষ্ট্র গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ কমানোর যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলি পুরোপুরি রক্ষিত হলেও আর ৭৯ বছরের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে অন্তত ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
তার ফলে এমন ঘনঘন ও ভয়ঙ্কর দাবানল হবে বিশ্বজুড়ে, যা আগে কখনও হয়নি। একই ভাবে ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, খরা, বন্যা, তাপপ্রবাহ ও শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা ও সংখ্যা এতটাই অকল্পনীয় ভাবে বেড়ে যাবে যে ২১০০ সালে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকবে না। মানবসভ্যতার কাছে এই পৃথিবী হয়ে পড়বে একটি ভিনগ্রহ। শুধু তাই নয়, স্থল ও জলের যাবতীয় বাস্তুতন্ত্রেরও আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা-বৃদ্ধিকে প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখতেই হবে।
কী হাল হবে পৃথিবীর, ২১০০ সালে? এই প্রশ্নে গবেষকরা বলছেন, ২১০০ সালের পরেও পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির রথের রশির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে না। তার ফলে, বিশ্বজুড়ে প্রচুর কৃষিজমি পুরোপুরি অ-ফসলি, অনুর্বর হয়ে পড়বে। সেগুলি ধীরে ধীরে সরে যাবে পৃথিবীর দুই মেরুর দিকে। যেহেতু দুই মেরুর বরফও ততদিনে গলে গিয়ে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ানোর পাশাপাশি বরফের চাঙরের নীচে লুকিয়ে থাকা স্থলভাগকেও উপরে তুলে আনবে।
আমাজন নদীর অববাহিকা আর ৪০০ বছরের মধ্যে একেবারেই শুকিয়ে যাবে। তাপপ্রবাহের তীব্রতা ও ঘটনার সংখ্যা এতটাই বেড়ে যাবে ভারতসহ ট্রপিক্যাল অঞ্চলের দেশগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১২৫৫
আপনার মতামত জানানঃ