আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ও পরে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালিবান নারীদের উপর বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতা চাপিয়ে দেয়। জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে, মৃতদেহ ধর্ষণ, শিক্ষা ও চাকরির অধিকার কেড়ে নেওয়া যার মধ্যে অন্যতম। এবার সূত্র মতে, এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যৌনকর্মীদের তালিকা তৈরি করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, তালিকায় নাম থাকা যৌনকর্মীদের খুঁজে বের করে তাদের মেরে ফেলা হতে পারে। এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য সান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালিবানের ডেথ স্কোয়াড পর্নো ওয়েবসাইটগুলোতে বিদেশিদের সঙ্গে যৌনকর্মে নিযুক্ত আফগান নারীদের খোঁজ করছে।
সূত্র মতে, তালিবান কাবুলে ঢোকার পর যৌনকর্মীদের অনেকে দেশ ছেড়েছেন। কিন্তু অনেকে এখনো লুকিয়ে রয়েছেন আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে। সম্প্রতি পর্নো সাইটগুলো খতিয়ে দেখে যৌনকর্মীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
সূত্র মতে, তালিবানের পক্ষ থেকে যৌন কর্মে নিযুক্ত নারীদের চিহ্নিত করতে একটি ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে বলেও দ্য সানের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দ্য সানের দাবি, এমন তালিকা তৈরির পরেই সেই তালিকা অনুযায়ী যৌনকর্মীদের খুঁজে বের করা হবে। তাদের মধ্যে যারা বিদেশিদের সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়েছেন তাদের মেরে ফেলা হতে পারে। বাকিদের যৌনদাসী করে রাখতে পারে তালিবান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালিবান যোদ্ধারা আফগান যৌন কর্মীদের হত্যা করতে বা যৌন দাসী বানানোর জন্য পর্নো সাইটগুলোতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
আগের শাসনামলের অভিজ্ঞতার আলোকে ধারণা করা হচ্ছে, যৌন কর্মে নিযুক্ত নারীদের জন্য সবচেয়ে হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে তালিবান। ক্ষমতায় না থাকলেও গত বিশ বছরে গোষ্ঠীটি পরকীয়া বা বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে জড়িত নারীদের হত্যা করেছে বলে বিভিন্ন খবরে উঠে এসেছে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালিবান। তখন যৌনপেশায় যুক্ত অনেক নারীকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছিল। গত ২০ বছর ধরেও বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক থাকা অনেক নারীকে খুন করেছে কট্টর ইসলামপন্থী তালিবান।
তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব সম্প্রদায়। তালিবান শরিয়া আইনে দেশ শাসনের ব্রত নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসায় আফগান নারীরা আবারও অধিকারবঞ্চিত হচ্ছেন এমন ধারণাও দিন দিন জোরালো হচ্ছে।
তালিবান আসার পর কাবুলের পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে শুরু করেছে। আর এই বদলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, কাবুল জুড়ে দেয়ালে দেয়ালে আঁকা নারীদের ছবি মুছে ফেলার পাশাপাশি নারীর ছবিতে বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডও গুঁড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/২০১৬
আপনার মতামত জানানঃ