জাতীয় শোক দিবস ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস স্মরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সভায় হামলা করেছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার ( ৩০ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের বাগিচারহাট এলাকায়।
এ সময় ইট পাটকেলের আঘাতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ৫ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে এখন অব্দি তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম (৪৫), চন্দনাইশ পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. লোকমান হাকিম (৪০) ও আওয়ামী লীগকর্মী নুরুল আমিন (৪১)।
এদিকে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটেছে বলে স্থানীয় একটি সূত্র দাবি করলে পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। এ ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যার পর উপজেলার বাগিচাহাট এলাকার হল টুডে কমিউনিটি সেন্টারে হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ জাতীয় শোক দিবস ও ২১ অগাস্ট স্মরণে আয়োজিত আলোচনা চলছিল। সভার শেষদিকে বাইরে থেকে হামলার পর বিক্ষুব্ধরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, আলোচনা সভার শেষ দিকে প্রধান অতিথি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের বক্তব্য শেষ হলে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সভা সেখানেই পণ্ড হয়ে যায়।
চন্দনাইশ থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, চন্দনাইশ উপজেলা ও গাছবাড়িয়া ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দেই। বেশ অনেকক্ষণ পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
কিছুদিন আগে উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি হলে অনেকেই পদবঞ্চিত হয়ে বিক্ষুব্ধ হয়। সোমবারের আলোচনা সভায় পদপ্রাপ্তরা উপস্থিত ছিল বলে পদবঞ্চিতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
হাশিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম বলেন, পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর আবু তৈয়বের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। পুলিশকে ঘটনা বলা হয়েছে, তারা অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছেন।
এর আগেও নোয়াখালীর চাটখিলে শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের হামলায় অনুষ্ঠান পণ্ড হয়।
রবিবার (১৫ আগস্ট) সকালে শেখ মুজিবের ম্যুরাল বেদীতে আগে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের উপস্থিতিতে উপজেলা ছাত্রলীগের হামলা হয়। হামলায় তেমন কেউ হতাহত না হলেও আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং পৌরসভার আগে শেখ মুজিবের ম্যুরাল বেদীতে ফুল দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের জাকির-তুষারের প্রত্যক্ষ মদদে হামলা হয়। হামলায় অন্তত ২০-৩০ জনের একটি দল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের পুস্পমালা ভাংচুর করেন।
এ বিষয়ে চাটখিল থানার ওসি মোঃ আবুল খায়েরের কাছে জানতে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগের বরাবর এমন আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠার বিরোধীতা করে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ক্ষমতা দেখিয়ে অপরাধীর মুক্তি পেয়ে যাবার প্রচলন ঘটতে থাকলে এর রোধ করা সম্ভব হবে না। অপরাধীর ক্ষমতার পরিচয়ে তার সাজা কমবেশি হওয়াটা দেশের জন্য লজ্জাজনক এবং এর থেকে বের জন্য আইনের সাথে জড়িত সকল স্তরের কর্মকর্তাদের সৎ হওয়া জরুরি।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/১৭২৭
আপনার মতামত জানানঃ