ভারতে থাকা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অমুসলিম নাগরিকেরা দেশটির নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। শুক্রবার (২৮ মে) এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, এই আদেশ জারি করে সিএএ কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের মোট ১৩ জেলায় বসবাসকারী অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কিন্তু সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের নাম নেই। বিধানসভা ভোটের সময় নাগরিকত্ব আইনের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের শরণার্থীদের আশ্বাস দিলেও প্রথম পর্বে রাখা হলো না তাদের নাম।
ভারতের নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ এবং ২০০৯ সালে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) অধীনে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তবে, এই বিজ্ঞপ্তি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী নয়। মূলত ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের আওতায় আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যাচাই–বাছাই করে ভারতের নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে সিএএ কার্যকর করা হয়। এই আইন পাস করার আগে থেকে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। দিল্লিতে হয় টানা বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভ দমনে সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এমনকি নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলাও চালিয়েছে। এরপরও সরকার এই আইন পাস করে। যদিও আইনটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখেও পড়েছে সরকার। এ ছাড়া এই আইন পাসের জেরে দিল্লিতে দাঙ্গাও হয়েছে।
নতুন এই আইন অনুসারে ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ, যারা এই দেশগুলোতে সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচিত হন, তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে একটি শর্ত রয়েছে। এই শর্ত হলো, যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসব এলাকায় বসবাস করছেন, তারা ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নোটিফিকেশন বলা হয়েছে, আগ্রহীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। রাজ্য, জেলা ও কেন্দ্রীয় সরকার পর্যায় থেকে এসব আবেদন যাচাই–বাছাই করা হবে।
উল্লেখ্য, নাগরিকপঞ্জি আর সিএএ নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব বুদ্ধিজীবী মহল। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বেঙ্গালুরু পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ। বলিউডে যেমন অনুরাগ কাশ্যপ, স্বরা ভাস্কররা আওয়াজ তুলেছেন, তেমনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, সোহাগ সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি সেন পথে নেমে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ হয়েছে দেশজুড়ে।
তবে বিজিবি শিবিরের পাল্টা বক্তব্য, মুসলিম দেশগুলোতে নির্যাতনের শিকার হিন্দু, শিখ ও অন্য সংখ্যালঘুদের বাঁচাতেই এই আইন আনা হয়েছে। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, কেড়ে নেওয়ার নয়। সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক বাঁচাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টির বিরোধিতা করছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫৩৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ