কারিগরি ও অকারিগরি কারণে অনেক সময় ভুতুড়ে বিলের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিল যাতে যথাযথ হয়, সে বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
নসরুল হামিদ বলেন, সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন ২টি বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা এবং ৪টি কোম্পানি রয়েছে। ৬টি বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ও কোম্পানির মোট গ্রাহক ৪ কোটি ৭১ লাখ। ভুতুড়ে বা অস্বাভাবিক বিল রোধে অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রি-পেইড বা স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথা সংসদকে জানান প্রতিমন্ত্রী।
সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিমের এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩১ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে নগদ ১১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং বন্ডের মাধ্যমে ২০ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা সমন্বয় করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ১৯৯৯-২০০০ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ক্রমাগত লোকসানের সম্মুখীন হয়। ওই সময় সরকারকে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হয়। তবে জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমে যাওয়ার ফলে নভেম্বর ২০১৪ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সরকারকে জ্বালানি তেলে কোনো ভর্তুকি দিতে হয়নি। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপিসি ২ হাজার ৭০৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে।
সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, অনুমোদনপ্রাপ্ত এলপিজি প্ল্যান্টের সংখ্যা ৭৮। এর মধ্যে প্রাথমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত ৫২টি, চূড়ান্ত অনুমোদনপ্রাপ্ত ২৪টি ও বিপিসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ২টি।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশজুড়ে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমিত আকারে লোডশেডিং হয়েছে। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ কাজে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য লোডশেডিং করা হয়। সরকার শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে সমতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে সচেষ্ট রয়েছে। সেচ মৌসুমে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি বিভিন্ন ধরনের গ্যাসকূপ খননের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সব কূপ খননের কাজ শেষ হলে গড়ে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হবে।
আপনার মতামত জানানঃ