আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার বদলে যাচ্ছে। আর এই সম্প্রসারণের হার বদলে যাওয়ার পেছনে ঠিক কী কাজ করছে, তা এখনও অজানা বা অজ্ঞাত।
মহাবিশ্ব যে গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে সেটিকে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘হাবল ধ্রুবক’। বেশ কয়েক দশক ধরেই এই ‘হাবল ধ্রুবকে’র মান মাপার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। তবে, এই পরিমাপ যতটা ‘নির্ভুল’ হচ্ছে, ততটাই অস্পষ্টও হয়ে উঠছে। আর এর কারণ হল, ভিন্ন ভিন্ন উপায়ের পরীক্ষায় আসছে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল।
তবে, এমনটা কেন ঘটছে, সে সম্পর্কে এখনও পরিষ্কার ধারণা মেলেনি। এর কারণ হতে পারে, মহাবিশ্ব ও পদার্থবিদ্যা নিয়ে মানুষের প্রচলিত ভুল ধারণা বা মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ পরিমাপে কোনও ধরনের সম্ভাব্য ত্রুটি।
মহাবিশ্বের বিস্তৃতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে এখন গবেষকরা ‘হাবল স্পেস’ টেলিস্কোপের পাশাপাশি ‘জেমস ওয়েব স্পেস’ টেলিস্কোপও ব্যবহার করছেন যাতে পরিমাপের নির্ভুলতা নিয়ে কোনও সন্দেহ না থাকে।
“মহাবিশ্ব পরিমাপের ত্রুটি এড়িয়ে গেলে এমন চমকপ্রদ সম্ভাবনা বাস্তবে উঠে আসতে পারে যে, দেখা যাবে এতদিন ধরে মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমরা যা বুঝতাম, তা ভুল ছিল,” বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি’র পদার্থবিদ অ্যাডাম রিস।
“এখন আমরা হাবল টেলিস্কোপে পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা বাড়িয়েছি। ফলে আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই ‘হাবল টেনশন’-এর মাধ্যমে সৃষ্ট ত্রুটিগুলো বাদ দিতে পারি।”
হাবল টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণ ও বিজ্ঞানীদের পরিমাপ সঠিক ছিল কি না, তা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সাল থেকে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। তবে বিজ্ঞানীদের এক অংশের দাবি, এ পরিমাপে এখনও ত্রুটি থাকতে পারে, যেখানে দূর থেকে পরিমাপ করলে এর নির্ভুলতা কমে আসতে পারে।
নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ‘উভয় টেলিস্কোপের সেরা ফলাফল দেখতে’ জেমস ওয়েব ও হাবল টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণগুলোকে সমন্বিত করেছেন। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, দূর থেকে পরিমাপ করলেও এর ফলাফল নির্ভরযোগ্য থাকবে।
গবেষণাটির বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে ‘জেডব্লিউএসটি অবজার্ভেশনস রিজেক্ট আনরিকগনাইজড ক্রাউডিং অফ সেফিড ফটোমেট্রি অ্যাজ অ্যান এক্সপ্লেনেশন ফর দ্য হাবল টেনশন অ্যাট ৮σ (সিগমা) কনফিডেন্স’ শীর্ষক নতুন গবেষণাপত্রে, যা প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।
আপনার মতামত জানানঃ