ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা গাজাকে কার্যত দুই ভাবে বিভক্ত করে ফেলেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, সেনারা গাজায় প্রবেশ করে উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে এবং কার্যতভাবে তারা গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগ করে ফেলেছে। একটি হচ্ছে উত্তর গাজা এবং আরেকটি দক্ষিণ গাজা।
এর আগে তিনি বলেন, সেনারা গাজার শহরটিকেও ঘিরে ফেলেছে। হাগারি বলেন, ইসরায়েল এখনো গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যেতে বাসিন্দাদের জন্য একটি ‘করিডর’ খোলা রেখেছে।
ইসরায়েল ঘোষণা করেছে তারা হামলা আরো জোরদার করবে এবং গাজা উপত্যকা এবং গাজা শহর ঘিরে স্থল অভিযানও আরো শক্তিশালী করা হবে।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত সাতই অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলায় এখনো পর্যন্ত ১০ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এরইমধ্যে তুরস্কে পৌঁছেছেন। ওই এলাকায় কূটনৈতিক সফরের অংশ হিসেবে তিনি তুরস্কে গেলেন। তিনি যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে আলোচনার দিকে জোর দিচ্ছেন।
এর আগে বাগদাদে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, আঞ্চলিক নেতাদের উচিত গাজায় মানবিক বিরতির প্রস্তাবকে ‘স্বাগত’ জানানো। ইসরায়েল অবশ্য বলেছে, কোন ধরনের বিরতিতে সম্মত হওয়ার আগে তারা জিম্মিদের বিষয়ে অগ্রগতি চায়।
গাজা উপত্যকায় থাকা বিবিসির প্রতিবেদকের মতে, রবিবার রাতে চালানো বিমান হামলা এ পর্যন্ত হওয়া হামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্র ছিল।
যুদ্ধবিরতিতে জিম্মি মুক্তির শর্ত নাকচ আরব নেতাদের
গাজায় একটি মানবিক বিরতির বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। রবিবার আম্মানে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন যেখানে আরব রাষ্ট্রগুলো মানবিক বিরতির পরিবর্তে জরুরী অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব আনেন।
জেরুসালেমে থাকা বিবিসির সংবাদদাতা লাইস ডুসেট বলেন, জর্ডানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে “খুব বিস্তারিত, স্পষ্ট এবং খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।”
তিনি বলেন, সব আরব দেশ বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে “২৩ লাখ ফিলিস্তিনিকে জিম্মি করার” অভিযোগ আনেন। ইসরায়েল এসব মানুষদের নিত্য প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়ার সুযোগ না দেয়া এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করার মাধ্যমে জিম্মি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গত সপ্তাহে জর্ডান তেল আবিব থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া জর্ডানই প্রথম আরব দেশ। ইসরায়েলের সাথে জর্ডানের শান্তি চুক্তি ঝুঁকিতে পড়তে পারে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “সবকিছু নিয়েই আলোচনার সুযোগ রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “ইসরায়েল সরকারের মতো আমরা রাগের বশবর্তী হয়ে কিছু করছি না এবং এ কারণে আমরা সামগ্রিক চিত্রটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি না।”
আপনার মতামত জানানঃ